শনিবার   ১৮ মে ২০২৪ |  জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১ |   ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

প্রেমের টানে দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলেন শান্তা, রক্তাক্ত করে জঙ্গলে পালালেন স্বামী

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০২২ ০০ ১২ ০২  

প্রেমের-টানে-দক্ষিণ-আফ্রিকায়-গেলেন-শান্তা-রক্তাক্ত-করে-জঙ্গলে-পালালেন-স্বামী

প্রেমের-টানে-দক্ষিণ-আফ্রিকায়-গেলেন-শান্তা-রক্তাক্ত-করে-জঙ্গলে-পালালেন-স্বামী

বাংলাদেশ থেকে প্রেমের টানে নিজ খরচে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন সিনথিলা আক্তার শান্তা (১৯)। তবে সুখ তার কপালে ছিলো না। তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে হত্যা করেছে ঘাতক স্বামী।

পুমালাঙ্গা প্রদেশের লিডেনবার্গে নামে বাংলাদেশি ঐ নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে লিডেনবার্গ এলাকার একটি নির্জন জঙ্গল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় লিডেনবার্গ থানায় মামলা করা হয়েছে।

ঘাতক স্বামী সুমন মিয়া টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের খোকা মাস্টারের ছেলে। তিনি প্রায় এক যুগ আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় আসেন। প্রথমে কেপটাউনে চাকরি করলেও পরবর্তীতে পুমালাঙ্গার লিডেনবার্গে ব্যবসা শুরু করেন।

নিহত সিনথিলা আক্তার শান্তা টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার সালাম শিকদারের মেয়ে।

নিহত শান্তার দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী জেঠাতো ভাই মো. আল মামুন চেন্টু জানান, শান্তা বাবা-মায়ের একমাত্র কন্যাসন্তান। সুমন আমার ফুফাতো ভাই। দেশে থাকা অবস্থায় আমার চাচাতো বোন শান্তার সাথে সুমনের দীর্ঘ দিনের জানাশোনা ও প্রেমের সম্পর্ক থাকায় পারিবারিকভাবে ১ বছর আগে তাদের দু'জনের ফোনে বিয়ে হয়েছে। সুমন দেশে না যাওয়ায় একপর্যায়ে শান্তা নিজ খরচে গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে দেশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় আসে। এখানে আসার কিছুদিন পর থেকেই সুমন তাকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। আশপাশের স্থানীয় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে সবাই অবগত রয়েছেন।

নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শান্তা দেশে তার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে- তাকে যেন আত্মীয়স্বজনের কাছে নিয়ে যায়। শান্তার বাবা রাতে বারবার ফোন করেও মেয়েকে না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় আত্মীয়স্বজনদের কাছে ফোন দেন। সেই মোতাবেক শান্তাকে নিয়ে আসার জন্য রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে তার জেঠাতো ভাইয়ের স্ত্রীসহ ৪ জন লিডেনবার্গে শান্তার বাসায় যান। সেখানে গেলে ভেতর থেকে বাসা তালাবদ্ধ দেখতে পান তারা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তালা ভেঙে নিহত শান্তার মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার মাথা, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি দিয়ে ১৭টা আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় এবং প্লাস্টিক দিয়ে মুখ পেঁচনো মৃত অবস্থায় তাকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশ তার লাশ নিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

নিহত শান্তার জানাজা লিডেনবার্গে সোমবার রাত ৮টার দিকে অনুষ্ঠিত হয়। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই তার লাশ দেশে পাঠানো হবে বলে জানান তার এক স্বজন আরাফাত ইসলাম অনিক।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর