সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হৃদপিণ্ডদাতার বিধবা বউকে বিয়ে, একইভাবে প্রাণ গেল দুই স্বামীর

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২২ ১৬ ০৪ ০২  

হৃদপিণ্ডদাতার-বিধবা-বউকে-বিয়ে-একইভাবে-প্রাণ-গেল-দুই-স্বামীর

হৃদপিণ্ডদাতার-বিধবা-বউকে-বিয়ে-একইভাবে-প্রাণ-গেল-দুই-স্বামীর

১২ বছর আগে টেরি কোটল নামের এক ব্যক্তির হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নতুন জীবন ফিরে পান সনি গ্রাহাম। পরে টেরির বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেন গ্রাহাম। তবে চমকের বিষয় হলো- গ্রাহাম ও টেরি কোটলের মৃত্যু একইভাবে হয়েছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর সময় টেরির বয়স ছিল ৩৩ ও গ্রাহামের বয়স হয়েছিল ৬৯। তারা দুইজনই মুখে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। 

ঘটনার তদন্তে পুলিশ জানায়, গ্রাহামের মৃত্যুর কারণ খুন বা অন্যকিছু নয়। আত্মহত্যাই করেছেন তিনি।

জর্জিয়া ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের বিশেষ এজেন্ট গ্রেগ হার্ভে জানান, গ্রাহামের মরদেহ তার বাড়ির পেছন থেকে উদ্ধার করা হয়।

১৯৭৯ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত সি পাইনসে ‘হেরিটেজ গল্ফ টুর্নামেন্টের’ পরিচালক ছিলেন গ্রাহাম। এরপর ১৯৯৫ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, শিগগির হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন না করা হলে তাকে বাঁচানো যাবে না। এরপরই গ্রাহামকে জানানো হয়, চার্লসটনে এক হৃদপিণ্ডদাতার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। দাতার মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যরা অঙ্গদান করার সিদ্ধান্ত নেন বলেও গ্রাহামকে জানানো হয়। ঐ দাতাই ছিলেন টেরি। টেরির হৃদপিণ্ড পাওয়ার পরই গ্রাহামের শরীরে  প্রতিস্থাপন করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে উঠতেন গ্রাহাম। এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে গ্রাহাম একের পর এক চিঠি পাঠাতে থাকেন টেরির পরিবারকে।

১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে টেরির বিধবা স্ত্রী চেরিল কোটলের সঙ্গে চার্লসটনে দেখা করেন গ্রাহাম। চেরিল তখন ২৮ বছর বয়সী যুবতী। এরপর গ্রাহাম ও চেরিল নিয়মিত দেখা শুরু করেন। সেখান থেকে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সৃষ্টি।

২০০১ সালে চেরিল ও তার চার সন্তানের জন্য ভিডালিয়াতে একটি বাড়ি কেনেন গ্রাহাম। তিন বছর পর, গ্রাহাম হিলটন হেডের হারগ্রে কমিউনিকেশনের প্ল্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন। এরপর ২০০৪ সালে চেরিলকে বিয়ে করেন গ্রাহাম। আগের বিয়ে থেকে এ দুই যুগলের মোট ছ’টি সন্তান এবং ছ’টি নাতি-নাতনি ছিল।

গ্রাহামকে বিয়ের পর চেরিল তাকে জানান আগের স্বামী টেরি কেন মারা গেছে বিষয়টি তার অজানা। চেরিল এ-ও জানান, টেরি কেন আত্মহত্যা করেছিলেন তা রহস্যই রয়ে গেছে। আত্মহত্যার আগে পর্যন্ত টেরির ব্যবহারে কোনো পরিবর্তনও ছিল না।

সবকিছু মিলিয়ে ভালোই কাটছিল গ্রাহাম ও চেরিলের বৈবাহিক জীবন। তবে আবার কাল নেমে আসে ২০০৮ সালে। হঠাৎ আত্মহত্যা করেন গ্রাহাম। টেরির মতো তিনিও মুখে শটগানের নল ঠেকিয়ে গুলি চালালে সঙ্গে সঙ্গেই তার মৃত্যু হয়।

গ্রাহামের আত্মহত্যার পর টেরির মৃত্যু রহস্য আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। প্রশ্ন উঠে কেন একইভাবে আত্মহত্যা করলেন চেরিলের প্রাক্তন ওবর্তমান স্বামী।

পুলিশও গ্রাহামের মৃত্যুর পর বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায়। অনেকে মনে করেন, এ ঘটনার পেছনে রয়েছে ‘টেরির আত্মার প্রতিহিংসা’। আবার অনেকের মতে- দুই স্বামীকে খুন করেন চেরিল নিজেই।

যদিও তদন্ত শেষে পুলিশ দাবি করে, টেরির মতো গ্রাহামও আত্মহত্যাই করেছেন। কেউ তাদের খুন করেননি।

আবার এক দলের দাবি ছিল, টেরির শরীরে এমন কোনো জিন ছিল যা হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পর গ্রাহামের শরীরে ঢুকে পড়ে। আর ঐ জিনের প্রভাবেই টেরির মতো গ্রাহামেরও আত্মহত্যা করেন। 

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর