রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১ |   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সন্ধ্যা হলেই মোবাইল-টিভি নিষিদ্ধ এই গ্রামে

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ১১ ১১ ০২  

সন্ধ্যা-হলেই-মোবাইল-টিভি-নিষিদ্ধ-এই-গ্রামে

সন্ধ্যা-হলেই-মোবাইল-টিভি-নিষিদ্ধ-এই-গ্রামে

প্রযুক্তির এ যুগে নানা কারণে আশীর্বাদের সঙ্গে সবচেয়ে বড় অভিশাপ হচ্ছে মোবাইল-টিভি। এ দুটি যন্ত্র পারিবারিক সম্পর্ক থেকে শুরু করে সামাজিক সম্পর্কে বেশ প্রভাব ফেলেছে। যেহেতু এই দুটি যন্ত্র থেকে কোনোভাবেই রেহাই পাওয়া সম্ভব নয় তাই এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন ভারতের মহারাষ্ট্রের একটি গ্রামের বাসিন্দারা।

বাসিন্দাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৭টা বাজলেই সাইরেন বেজে ওঠবে গ্রামে। এরপর দেড় ঘণ্টা সবাইকে মোবাইল-টিভি থেকে দূরে থাকতে হয়।রাত সাড়ে ৮টায় আরেকটি সাইরেন বাজলে চালু করা যাবে এ আধুনিক ডিভাইসগুলো।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি আসক্তি কমিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে কথাবার্তা বাড়াতে ভারতের মহারাষ্ট্রের সাঙলি জেলার ভাদগাঁও গ্রামে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

গ্রামের বাসিন্দা বন্দনা মোহিতে বলেন, দুই সন্তান মোবাইলে গেম খেলা ও টিভির প্রতি আসক্ত। তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গ্রামে নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পর থেকে তার স্বামীও কর্মক্ষেত্র থেকে ফিরে সন্তানদের লেখাপড়ায় সাহায্য করেন। এতে নিজেও স্বস্তিতে রান্নাঘরের কাজ সেরে নিতে পারি।

তবে গ্রাম্য কাউন্সিলের জন্য ডিজিটাল দুনিয়ার অন্যতম আসক্তি থেকে সবাইকে দূরে রাখাটা সহজ ছিল না।

বিজয় মোহিতে জানান, যখন এ সমস্যাটি নিয়ে কাউন্সিল আলোচনা করছিল তখন গ্রামের পুরুষেরা উপহাস করেছিল। তখন গ্রামের সব নারীদের ডেকে আনেন তারা। তাদের মতামত জানতে চান। নারীরা অকপটে স্বীকার করেন যে টিভি সিরিয়াল দেখা ও মোবাইলের পেছনে তাদের অনেক সময় ব্যয় হয়। পুরো গ্রামে কয়েক ঘণ্টার জন্য টিভি-মোবাইল বন্ধ রাখার নিয়ম করতে সমর্থন দেন গ্রামের নারীরা। এরপরই আরেকটি সভায়গ্রামের মন্দিরে ওপর সাইরেন লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়। নির্দিষ্ট সময়ে তা বাজানো হবে। তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাও সহজ ছিল না। সাইরেন বন্ধ হয়ে গেলেও কাউন্সিলের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি টহল দিতেন এবং সবাইকে মোবাইল-টিভি বন্ধ রাখতে বলতেন।

ভারগাঁও গ্রামের আখচাষী দিলীপ মোহিতের স্কুলগামী তিন ছেলে রয়েছে। দিলীপ বলেন, গ্রাম্য কাউন্সিলের নেয়া সিদ্ধান্তে ছেলেদের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। এখন ছেলেরা পড়াশোনায় আগের চেয়ে বেশি মনোযোগী হয়েছে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর