যেসব ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র বানিয়েছে উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়ার উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের ওপর দিয়ে ৪ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রশান্ত মহাসাগরে পতিত হয়েছে। এটি ২০১৭ সালের পর দূরপাল্লার আন্তঃদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটিই প্রথম নয়, চলতি বছর ৩০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। এর মধ্যে স্বল্পপাল্লা, মধ্যমপাল্লা ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে- ব্যালিস্টিক, ক্রুজ ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র।

জাপানের ওপর দিয়ে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি মধ্যম পাল্লার, যার নাম হুয়াসং-১২। এ ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ৪ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। এটি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গুয়াম দ্বীপে নিক্ষেপ করতে সক্ষম উত্তর কোরিয়া।

রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের জোসেফ বার্ন বলেন, দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করছে উত্তর কোরিয়া। জাপানের ওপর দিয়ে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে এটা সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার। এটি ভবিষ্যতে পরমাণু অস্ত্রবাহী আরো একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ইঙ্গিত রয়েছে। 

ধারণা করা হচ্ছে, আগামীতে পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা চালাতে পারে উত্তর কোরিয়া। এছাড়া হুয়াসং-১৪ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে দেশটি। এ ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ৮ হাজার কিলোমিটার। কোনো কোনো গবেষণায় এটি ১০ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানার সক্ষমতা দেখা গেছে। এর অর্থ উত্তর কোরিয়ার এ ক্ষেপণাস্ত্র নিউইয়র্কেও পৌঁছাতে সক্ষম। এটাই উত্তর কোরিয়ার প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।

২০২০ সালের অক্টোবর মাসে সর্বাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল হুয়াসং-১৭ উন্মোচন করে উত্তর কোরিয়া। ধারণা করা হচ্ছে- ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ১৫ হাজার কিলোমিটার বা তার চেয়েও বেশি। এ ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত তিন থেকে চারটি ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। সাধারণত অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্রগুলো একটি ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। একাধিক ওয়ারহেড বহন করতে পারার কারণে আক্রান্ত কোনো দেশের পক্ষে হুয়াসং-১৭ ক্ষেপণাস্ত্রটিকে প্রতিরোধ করা কঠিন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন নতুন ক্ষেপণাস্ত্র তুলে ধরার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করছে উত্তর কোরিয়া। দেশটি ২০২১ সালের মার্চ মাসে নতুন ধরনের একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। এটি কৌশলগত বা ট্যাকটিক্যাল একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যা আড়াই টন ওজনের বিস্ফোরক বহন করতে পারে। এর মানে হচ্ছে- এ অস্ত্রটি তাত্ত্বিকভাবে পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম।

জেমস মার্টিন সেন্টার ফর ননপ্রলিফারেশন স্টাডিজের বিশ্লেষকরা বলেছেন, কেএন-২৩ নামের পরীক্ষা চালানো ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে ট্যাকটিক্যাল ক্ষেপণাস্ত্রটি সেটির উন্নত সংস্করণ করেছে উত্তর কোরিয়া।

এছাড়া হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মারাত্মক ভয়ঙ্কর। এ ক্ষেপণাস্ত্রের গতি অত্যন্ত বেশি। এটি শব্দের চেয়েও কয়েক গুণ বেশি গতিতে উড়তে পারে। এছাড়া এটি অল্প উচ্চতায় উড়ায় ক্ষেপণাস্ত্রটি রাডারে ধরা পড়ে না।