বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১ |   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কেরালার নরবলির মতো ইলাহাবাদেও ছিল মানুষে মাংস ও ঘিলু খাওয়ার কাণ্ড

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ২০ ০৮ ০১  

কেরালার-নরবলির-মতো-ইলাহাবাদেও-ছিল-মানুষে-মাংস-ও-ঘিলু-খাওয়ার-কাণ্ড

কেরালার-নরবলির-মতো-ইলাহাবাদেও-ছিল-মানুষে-মাংস-ও-ঘিলু-খাওয়ার-কাণ্ড

ভারতের কেরালার নরবলি কাণ্ডে রাজ্যের আনাচে-কানাচে বইছে হইচই। এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুই নারীকে বলি দিয়ে তাদের মাংস খাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মুহাম্মদ শফীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শফীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, কেরালার দম্পতিকে ধন-সম্পত্তিরর লোভ দেখান তিনি। নরবলি দিলে ধনসম্পত্তি বাড়বে, এ টোপ দিয়ে তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শামিল করেন।

নরহত্যা ও নরমাংস খাওয়ার অভিযোগ আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। ক্যানিবালিজম বা নরমাংস খাওয়ার বিষয়টিতে প্রথমেই উঠে আসে রাজা কোলন্দরের নাম।

ইলাহাবাদের বাসিন্দা কোলন্দরের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে একাধিক খুনের অভিযোগ ওঠে। ২০০১ সালে এক সাংবাদিক হত্যার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর একে একে প্রকাশ্যে আসে আরো হত্যার ঘটনা। শুধু হত্যা নয়, মানুষ মেরে তাদের মাংস খেত কোলন্দর। হত্যার পর মৃত শরীরের একাধিক অঙ্গ, এমনকি ঘিলুও নাকি খেয়েছেন তিনি।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, কোলন্দরের বিরুদ্ধে এর আগে একাধিক গাড়ি চুরির অভিযোগ ছিল। মূলত, গাড়ির চালকদের গুলি করে হত্যা করতেন কোলন্দর। তারপর গাড়ি লুঠ করতেন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, পুলিশ জানতে পারে, হত্যার পর মরদেহগুলো টুকরো টুকরো করে কাটতেন কোলন্দর। কিছু কিছু টুকরো রান্নাও করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে কেরালা কাণ্ডের ছায়া পাচ্ছেন?

কোলন্দরের খামারবাড়ি থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে তার প্রতি খুনের বিবরণ ছিল। তার বিরুদ্ধে ১৫টির বেশি খুনের অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশের দাবি, হত্যার পর মৃত ব্যক্তির ঘিলু রান্না করে খেতেন কোলন্দর। আর কৃতকর্মের স্মারক হিসেবে খুলিগুলো জমিয়ে রাখতেন। মরদেহের বাকি অংশ নিকটবর্তী জলাধারে ফেলে দিতেন।

কোলন্দরের বিশ্বাস, মৃত ব্যক্তির ঘিলু খেলে বুদ্ধি বাড়বে। প্রথম যে হত্যাটি তিনি করেন, সেই ব্যক্তি ছিলেন কায়স্থ। কায়স্থদের ঘিলুতে অনেক বুদ্ধি থাকে বলে ধারণা ছিল তার। তাই তাকে বেছে নেন তিনি। কোলন্দরের কাজে সাহায্য করতেন তার স্ত্রী ফুলন দেবী। তবে কোলন্দর বা ফুলন দেবী কোনোটাই আসল নাম নয়। পুলিশ জানতে পারে, কোলন্দরের আসল নাম রাম নিরঞ্জন ও তার স্ত্রীর নাম গোমতী।

হত্যা ও নরমাংস খাওয়ার পর কোলন্দর জমানো মাথার খুলিগুলো নিয়ে ‘তন্ত্রসাধনা’য় বসতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রেও কেরালা কাণ্ডের ছায়া রয়েছে। খুলিগুলোর সঙ্গে নাকি তিনি কথাও বলতেন। তারপর দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হতো সেগুলো।

পুলিশ জানায়, প্রতিটি মাথার খুলির পিছনে মৃত ব্যক্তির পদবি লিখে রাখতেন কোলন্দর। ধর্ম, বর্ণ, জাতি তার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

জানা যায়, সাংবাদিক ধীরেন্দ্র কোলন্দরের কীর্তি জানতে পেরে গিয়েছিলেন। তাই তাকেও মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ২০১২ সালে কোলন্দরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হয়। বর্তমানে উন্নাওয়ের একটি জেলে তাকে রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়ান প্রিডেটর: দ্য ডায়েরি অফ এ সিরিয়াল কিলার’ নামে নেটফ্লিক্সে একটি ওয়েব সিরিজ় মুক্তি পেয়েছে। সেই সিরিজের মূল উপজিব্য হচ্ছে কোলন্দর।

-আনন্দবাজার পত্রিকা।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর