মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১ |   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসে যেভাবে ধরা পড়লেন ফাঁসির আসামি

প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬ ০৪ ০১  

স্ত্রীর-সঙ্গে-দেখা-করতে-এসে-যেভাবে-ধরা-পড়লেন-ফাঁসির-আসামি

স্ত্রীর-সঙ্গে-দেখা-করতে-এসে-যেভাবে-ধরা-পড়লেন-ফাঁসির-আসামি

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ২০০৬ সালে চাঞ্চল্যকর শহিদুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. শাহিন আলমকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। সোমবার রাতে মানিকগঞ্জের ঘিওরে স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে এসে ধরা পড়েন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে আশুলিয়ার একই গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন শহিদুল ইসলাম ও আসামি মো. শাহিন আলম। তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক ছিল। ২০০৪ সালে ঢাকার ধামরাইয়ের গোয়াড়ীপাড়ায় ‘বাংলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা’ নামক একটি সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন তারা। এনজিওতে লাভের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় শাহিন সব লভ্যাংশ নিজে ভোগ করার জন্য ভিকটিমকে কিছু টাকার প্রস্তাব দিয়ে এনজিওটি নিজের করে নিতে চান। কিন্তু ভিকটিম তাতে রাজি হননি। এতে আসামি শাহিন ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ঘটনার ২০-২৫ দিন আগে শাহিন তার মামাতো ভাই টাঙ্গাইলের সন্ত্রাসী রাজা মিয়াকে নিয়ে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০০৬ সালের ২০ মে ঘটনার দিন দুপুরের পর থেকেই শাহীন তার মামাতো ভাই ও অপর আসামি সাহেদ, কুদ্দুস, বিষ্ণু সুইপার এবং ড্রাইভার রহম আলী সঙ্গে তার জন্য পাত্রী দেখতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। তখন ভিকটিম রাজি হয়ে তাদের সঙ্গে মাইক্রোবাসে ওঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর শহিদুলকে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেন তারা।

ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। পরে পুলিশ শাহীনকে গ্রেফতার করলে আসামি শাহীন ভিকটিমকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আসামি শাহীন আলম ১০ বছর হাজত খেটে ২০১৬ সালে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান।

মামলা তদন্ত করে গ্রেফতার দুই আসামি শাহিন আলম ও সাহেদ এবং পলাতক আসামি রাজা মিয়া, আ. কুদ্দুস, বিষ্ণু সুইপার, রহম আলী ড্রাইভার ও মাইক্রোবাসের মালিক সেলিমসহ মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে গত বছরের ১ ডিসেম্বর মো. শাহিন আলমকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাহেদ, রাজা মিয়া, আব্দুল কুদ্দুস ও বিষ্ণু সুইপারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।   

র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শাহিন আলম বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন এলাকায় পেশা পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিলেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ভয়ে পরিবারসহ দেশ ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সেই উদ্দেশ্যে তিনি সোমবার রাতে মানিকগঞ্জের ঘিওরে স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্রযের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর