বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১ |   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাফে জয়ে কলসিন্দুর বিদ্যালয়ের মেয়েদের অবদান 

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭ ০৫ ০১  

সাফে-জয়ে-কলসিন্দুর-বিদ্যালয়ের-মেয়েদের-অবদান 

সাফে-জয়ে-কলসিন্দুর-বিদ্যালয়ের-মেয়েদের-অবদান 

ইতিহাসে প্রথমবারের মত সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। মেয়েদের এমন সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার কলসিন্দুর বিদ্যালয়ের। এই এক স্কুল থেকেই প্রায় ১২-১৩ জন খেলোয়াড় খেলছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে।

এই স্কুল থেকেই প্রতিবছরই নতুন করে অনেকে যুক্ত হচ্ছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে। 

কলসিন্দুর বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক মফিজ স্যারের হাত ধরে ফুটবলে উত্থান হয় এই মেয়েদের। প্রথমে ২০০৯ সালে কলসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেয়েরা ফজিলাতুন নেছা কাপের জন্য দল গঠন করে। 

যদিও প্রথম দুই বছর তারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। পরে আরও কঠোর পরিশ্রম আর অনুশীলনের মাধ্যমে তারা জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।

ওই মেয়েরা বড় হয়ে কলসিন্দুর উচ্চবিদ্যালয়ে যায়। তারপর একে একে যোগ দেন জাতীয় দলে। অথচ ওদের প্রায় সবারই অভাবের সংসার। কারও মা রাস্তায় কাজ করেন। কারও বাবা রিকশা চালান। কারও বা আবার শ্রমজীবী পরিবার। সে সময় যদি তাদের জিজ্ঞাসা করা হতো, তারা কী চায়, উত্তর পাওয়া যেত, পেট ভরে খেতে চাই। বেশি করে খাবার দিয়ে দিন, বাড়িতে সবাই মিলে খাব।

নেপালের বিপক্ষে সোমবার সাফের ফাইনালে মাঠে নামার আগে মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার ফেসবুক পোস্টে নিজেই জানিয়েছিলেন তাদের সংগ্রামের কথা। তিনি লেখেন, ‘পাহাড়ের কাছাকাছি স্থানে বাড়ি আমার। পাহাড়ি ভাইবোনদের লড়াকু মানসিকতা, গ্রাম বাংলার দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতি পরত খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার। ফাইনালে আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, এগারোজনের যোদ্ধাদল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে’।

জীবন যুদ্ধের সে সব সংগ্রাম পেছনে ফেলে আজ ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের মেয়েরা। যাদের উঠে আসার পেছনে আবার নেপথ্যে নায়ক ময়মনসিংহের কলসিন্দুর বিদ্যালয়ের মফিজ স্যারের মতো মানুষরা।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী