সাফে জয়ে কলসিন্দুর বিদ্যালয়ের মেয়েদের অবদান
প্রকাশিত : ০৫:৩০ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার
সাফে-জয়ে-কলসিন্দুর-বিদ্যালয়ের-মেয়েদের-অবদান
এই স্কুল থেকেই প্রতিবছরই নতুন করে অনেকে যুক্ত হচ্ছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে।
কলসিন্দুর বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক মফিজ স্যারের হাত ধরে ফুটবলে উত্থান হয় এই মেয়েদের। প্রথমে ২০০৯ সালে কলসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেয়েরা ফজিলাতুন নেছা কাপের জন্য দল গঠন করে।
যদিও প্রথম দুই বছর তারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। পরে আরও কঠোর পরিশ্রম আর অনুশীলনের মাধ্যমে তারা জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
ওই মেয়েরা বড় হয়ে কলসিন্দুর উচ্চবিদ্যালয়ে যায়। তারপর একে একে যোগ দেন জাতীয় দলে। অথচ ওদের প্রায় সবারই অভাবের সংসার। কারও মা রাস্তায় কাজ করেন। কারও বাবা রিকশা চালান। কারও বা আবার শ্রমজীবী পরিবার। সে সময় যদি তাদের জিজ্ঞাসা করা হতো, তারা কী চায়, উত্তর পাওয়া যেত, পেট ভরে খেতে চাই। বেশি করে খাবার দিয়ে দিন, বাড়িতে সবাই মিলে খাব।
নেপালের বিপক্ষে সোমবার সাফের ফাইনালে মাঠে নামার আগে মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার ফেসবুক পোস্টে নিজেই জানিয়েছিলেন তাদের সংগ্রামের কথা। তিনি লেখেন, ‘পাহাড়ের কাছাকাছি স্থানে বাড়ি আমার। পাহাড়ি ভাইবোনদের লড়াকু মানসিকতা, গ্রাম বাংলার দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতি পরত খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার। ফাইনালে আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, এগারোজনের যোদ্ধাদল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে’।
জীবন যুদ্ধের সে সব সংগ্রাম পেছনে ফেলে আজ ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের মেয়েরা। যাদের উঠে আসার পেছনে আবার নেপথ্যে নায়ক ময়মনসিংহের কলসিন্দুর বিদ্যালয়ের মফিজ স্যারের মতো মানুষরা।