সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শৈশব ফেরাতে মোবাইল-টিভির ওপর নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২২ ১৩ ০১ ০১  

শৈশব-ফেরাতে-মোবাইল-টিভির-ওপর-নিষেধাজ্ঞা

শৈশব-ফেরাতে-মোবাইল-টিভির-ওপর-নিষেধাজ্ঞা

স্মার্ট ফোনের স্ক্রিনে আটকে গিয়েছে শৈশব। বিকেলে আর খেলার মাঠে ভিড় নেই। বড়দের চোখও আটকে টিভি বা ফোনের স্ক্রিনে। মুখোমুখি আড্ডা, স্বাভাবিক সামাজিক যোগাযোগ যেন ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। তবুও ফোন-টিভি ছাড়া চলার উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতেই উলটো পথে হাঁটল ভারতের কর্নাটক রাজ্যের একটি গ্রাম। দিনে ২ ঘণ্টা মোবাইল ও টিভি দেখার উপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা । সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন।

কর্নাটকে মহারাষ্ট্র সীমানা লাগোয়া ছোট গ্রাম আথানির সাংলির ভাদগাঁওয়ের বাসিন্দাদের মতে, মোবাইল ফোন এবং টিভির দাপটে ক্রমেই পরস্পরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে মানুষ। কমছে সামাজিক যোগাযোগ, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা। এর ফলে মানুষের বিপদে মানুষের এগিয়ে আসা, খোঁজ খবর নেওয়ার মতো ঘটনাগুলি দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে মত তাদের। শিশুদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেক শিশু খেলা বন্ধ করে দেওয়ায় ফলে তাদের, সুস্থ জীবন ধারণের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে বলে মত গ্রামবাসীদের।

এমন পরিস্থিতি থেকে সাময়িক স্বস্তি মিলতে কর্ণাটক-মহারাষ্ট্র সীমানায় ছোট্ট গ্রামটিতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা সমস্ত রকমের মোবাইল ফোন ব্যবহার এবং টিভি দেখার উপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সন্ধে ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে মোবাইল ফোন এবং টেলিভিশন। কেন এই ধরনের অভিনব সিদ্ধান্ত?

ভাদগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি বিজয় মোহিত জানান যে কোভিড মহামারির সময় পড়ুয়ারা যাতে অনলাইনে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে, তারজন্য তাদের বাবা-মায়েরা মোবাইল ফোন কিনে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।বর্তমানে হোম-স্কুলিংয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থীই এখন তাদের অভিভাবকদের অজান্তেই স্মার্টফোনের অপব্যবহার শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে টিভি আসক্তিও।

এরপরেই মোবাইল ফোনের অপব্যবহার এবং টিভি আসক্তি রুখতে গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়। সেই প্রস্তাব মত প্রতিদিন সন্ধে ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মোবাইল ফোন ও টিভি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রামের একটি মন্দিরে উপর একটি লাউডস্পিকার বসানো হয়েছে। মোবাইল ও টিভি বন্ধ রাখার জন্য সাইরেন বাজানো হয় বলে জানিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি বিজয় মোহিত। আর এই সাইরেন বাজার পরেই টিভি-ফোন বন্ধ করে গ্রামের পথে বেরিয়ে পড়েন স্থানীয়রা। এই সময়টা পরস্পরের সঙ্গে আড্ডা, কুশল-বিনিময় করেই কাটান তারা।

সূত্র: নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এই সময়

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর