মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১ |   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বপ্নের সেতুর বাস্তবায়ন কাল

প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২২ ১৯ ০৭ ০২  

স্বপ্নের-সেতুর-বাস্তবায়ন-কাল

স্বপ্নের-সেতুর-বাস্তবায়ন-কাল

কথা ছিল নভেম্বরে উদ্বোধন করা হবে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে উদ্বোধনের সময়কাল। ১০ অক্টোবর দুপুর ১২টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হবে স্বপ্নের তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু। আর এ সুবর্ণ সময়কে ঘিরে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন উভয় পাড়ের বাসিন্দারা। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে এক হতে যাচ্ছে সদর ও বন্দরের মেলবন্ধন।

নারায়ণগঞ্জ থেকে বন্দরে সড়ক পথে যাবার সুযোগ মাত্র দুটি। একটি হচ্ছে কাঁচপুর ব্রিজ অতিক্রম করে বন্দরে প্রবেশ, অন্যটি নবীগঞ্জ ঘাট থেকে ফেরি পারাপার হয়ে বন্দরে প্রবেশ। কাচপুর ব্রিজ অতিক্রম করে সাধারণত নিত্য নৈমত্তিক কাজে কেউই এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করেন না। কেবলমাত্র ঢাকা বা দূরবর্তী গন্তব্যে যেতেই ব্যবহার করেন সেই পথ। অন্যদিকে ফেরিতে চলাচলের জন্য যাত্রীদের অন্তত অপেক্ষা করতে হয় ৪৫ মিনিট। ফলে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয় সড়ক পথে বন্দর থেকে সদরে যাতায়াত করতে।

এমন পরিস্থিতিতে শিল্প ও বাণিজ্য নগরী নারায়ণগঞ্জের অন্যতম চাহিদা ছিল সেতু। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে শীতলক্ষ্যার উপর দিয়ে সেতু নির্মাণ। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন না হলেও ঠিকই নির্মিত হয়েছে সদরের সঙ্গে বন্দরের সংযোগ। সদর উপজেলার সৈয়দপুর এবং বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জে সেতু নির্মাণের মধ্যে দিয়ে একত্র হয়েছে বন্দর ও সদর।

সূত্র জানায়, ১ হাজার ২৩৪ দশমিক ৫০ মিটার দীর্ঘ ৬ লেন বিশিষ্ট এই সেতুতে স্থানীয় ধীর গতির যান চলাচলের জন্য ২টি লেন রাখা হয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ শেষে সেতু খুলে দিতে এখন চলছে অ্যাপ্রোচ সড়ক ও খুঁটিনাটি কাজ। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ৬০৮.৫৬ কোটি টাকা। ১০ অক্টোবরের পর থেকে ব্রিজ উন্মুক্ত করে দিলেই শুরু হবে বন্দরের সঙ্গে শহরের যাতায়াত। বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া, ১৯, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা দ্রুত শহরে পৌঁছাতে পারবেন এই ব্রিজের মাধ্যমে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ থেকে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহন এই ব্রিজ ব্যবহার করে দ্রুত সময়ে বন্দর দিয়ে উঠে যেতে পারবে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ফলে চাপ কমে আসবে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড এবং আদমজী সড়কের উপর।

শুধু তাই নয়, এই ব্রিজের কারণে নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে মুন্সীগঞ্জের সঙ্গে বাণিজ্য আরো সহজ হয়ে উঠবে। মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে এতদিন মুক্তারপুর ব্রিজ পেরিয়ে পরিবহনগুলো পঞ্চবটি, চাষাঢ়া, লিংকরোড ঘুরে চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতো। সেই পথ এখন কমে এসেছে এই ব্রিজের কারণে। বর্তমানে মুন্সীগঞ্জের পরিবহনগুলো মুক্তারপুর ব্রিজ থেকে নেমেই দ্রুত সময়ে উঠে যাবে এই শীতলক্ষ্যা ৩য় সেতুতে। এরপর মদনপুর থেকে সরাসরি ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতে পারবে যানবাহনগুলো। তবে এসবের পাশাপাশি মদনপুর-ফরাজিকান্দা সড়কে যে কয়েকগুণ যানবাহনের চাপ বাড়বে তা নিশ্চিত।

বন্দরের মুছাপুর এলাকার বাসিন্দা রমজান শেখ বলেন, ব্রিজ খুলে দিলে মালবাহী যানবাহনের অনেক সুবিধা হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে না থেকে দ্রুত যাতায়াত করতে পারবে। এই ব্রিজের যে কত সুবিধা হবে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। বন্দরবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল এ ব্রিজ। সেটা অবশেষে উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। এই ব্রিজের কারণে দুই পাড়ের ব্যবসা বাণিজ্য আরো সমৃদ্ধ হবে।

বন্দরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিরিন বলেন, শহরের মাঝে ব্রিজ হলে আমাদের যাতায়াতে সুবিধা হতো। এ ব্রিজের কারণে পারাপার জনিত সুবিধা না পেলেও অন্যান্য অনেক সুবিধা হবে আমাদের। যেমন আগে শীতলক্ষ্যা বা সৈয়দপুর যাবার জন্য অনেক পথ পাড়ি দিতে হতো। এখন ব্রিজের কারণে সেই পথটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। দ্রুত সময়ে নদী পাড় হয়ে শহরে পৌঁছে যেতে পারবো। এই ব্রিজের পাশাপাশি নবীগঞ্জ হাজীগঞ্জ ঘাট এলাকায় একটা ব্রিজ হলে পারাপার করা মানুষের বেশি উপকার হবে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী