বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১ |   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অনেক বেশি ভারী মনে হচ্ছে: কুমার বিশ্বজিৎ

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪ ০২ ০১  

অনেক-বেশি-ভারী-মনে-হচ্ছে-কুমার-বিশ্বজিৎ

অনেক-বেশি-ভারী-মনে-হচ্ছে-কুমার-বিশ্বজিৎ

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মারা গেছেন কিংবদন্তি গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সংগীতাঙ্গনের অন্য শিল্পীদের মতো তার চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কুমার বিশ্বজিৎ। অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন- তার মৃত্যুর খবরটি শুনেছি। গাজী ভাইয়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছে। আকস্মিকভাবে দুঃসংবাদটি পেলাম। এত বড় শোক নেওয়া ভীষণ কষ্টকর; অনেক বেশি ভারী মনে হচ্ছে।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে গেছেন। তার মেয়ে দিঠি আনোয়ার একজন কণ্ঠশিল্পী; বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন। মেয়ে দেশে ফিরলে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন ছেলে সারফরাজ আনোয়ার।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার গীতিকবিতায় অবদান রাখার জন্য ২০০২ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গানের এই গীতিকার। তার লেখা উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’।

তাছাড়া তার লেখা কালজয়ী গানগুলো হলো- ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’ প্রভৃতি।

বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০ বাংলা গানের মধ্যে তিনটি গানের রচয়িতা গুণী এই গীতিকবি। এ গানগুলো হচ্ছে- ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল’ ও ‘একবার যেতে দে না’।

১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ১৯৬২-৬৩ সালে মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ার লিখেন প্রথম গান ‘বুঝেছি মনের বনে রং লেগেছে’। গানটির সুর করেছিলেন নাজমূল হুদা বাচ্চু ও শিল্পী ছিলেন ফরিদা ইয়াসমিন। ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানে গান লিখে ৫০ টাকা আয়ের মাধ্যমে পেশাদার গীতিকার হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি।

১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে কাহিনি চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান লিখে দক্ষতার পরিচয় দেন তিনি। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ ১৯৮২ সালে মুক্তি পায়। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৪১টি।

১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতি পদক, একাধিকবার বাচসাস পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা রয়েছে তার ঝুলিতে। তিনি রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী