বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১ |   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে বাহারী রঙের গোলাপ

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২২ ১২ ১২ ০২  

সুঘ্রাণ-ছড়াচ্ছে-বাহারী-রঙের-গোলাপ

সুঘ্রাণ-ছড়াচ্ছে-বাহারী-রঙের-গোলাপ

শেরপুরের বনাঞ্চলে পতিত জমিতে সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে বাহারী রঙের গোলাপ। জেলায় প্রথমবারের মত নানা রঙের গোলাপ চাষ শুরু করেছেন মোহাম্মদ আলী নামে এক যুবক। পতিত জমিতে বাহারী রঙের গোলাপ চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। 

উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আলী জানান, ঝিনাইগাতীর রাংটিয়া এলাকার সন্ধ্যাকুড়া গ্রামে ১৫০ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন তার স্বপ্নের গোলাপ বাগান। গত ১৫ বছর ধরে ঢাকার শাহবাগ, উত্তরা, ধানমন্ডি এবং গুলশানে নানা ধরণের ফুলের ব্যবসা করতেন তিনি। এক সময় চিন্তা করেন নিজ গ্রামের বনাঞ্চলে পতিত জমিতে গোলাপ চাষ করবেন। এই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চুক্তি ভিত্তিতে বাৎসরিক সাড়ে তিন লাখ টাকায় আট বছরের জন্য জমি লিজ নেন। গোলাপ বাগানের নাম রাখেন জননী ফ্লাওয়ারস গার্ডেন। 

তিনি আরো জানান, নিজের পুঁজি এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় ১৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ভারতের চেন্নাইয়ে এক পরিচিত জনের মাধ্যমে দুই দফ্য়া চাইনিজ ও থাই জাতের ১৮ হাজার গোলাপের চারা সংগ্রহ করেন। পরে জমিতে জৈব সার, টিএসপি ও ইউরিয়া ব্যবহার করে চারা রোপণ করেন। আর চারা রোপণের এক মাস পর থেকে ফুল আসা শুরু করে। তবে বিক্রি উপযোগী ফুল পাওয়া যায় চারমাস পর থেকে। প্রায় সাতমাস বয়সী ওই বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে সাদা, লাল, হলুদ ও পিংক কালারের বাহারী গোলাপ।

বাগানের শ্রমিক ফজলুর রহমান ও কুসুম আলী জানান, তারা বাগানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। প্রতিটি গাছের পরিচর্যা ছাড়াও বিক্রির জন্য ফুল কাটিং, পরিস্কার করা এবং পাইকারদের হাতে পোঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া প্রতিনিয়ত বাগান আগাছামুক্ত রাখতে আরো বেশকিছু শ্রমিক দৈনিক চুক্তি ভিত্তিতে শ্রম দেন। তারা মনে করেন গ্রামে গোলাপ বাগান হওয়ায় বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে স্থানীয় বেশ কয়েকজন।  

স্থানীয় পাইকার আছর আলী এবং মোকছেদ বলেন, উৎপাদিত গোলাপ স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি হচ্ছে। দৈনিক গড়ে প্রায় ১৮০০-২০০০ পিস ফুল সংগ্রহ করা হয়। যার একশ পিসের ফুলের ঝুড়ি ২০০০-৪০০০ টাকায় হাত বদল হয়। 

লিজদাতা মনজুর মিয়া বলেন, মোহাম্মদ আলীর সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই গোলাপ বাগান তৈরি করতে আগ্রহী হচ্ছেন। তার আরো কিছু পতিত জমি অন্য যুবকরা ভাড়া নিয়ে গোলাপ বাগান করতে চাইছেন। 

স্থানীয় দোকানদার রশীদ জামান ও গেদা মিয়া বলেন, এলাকায় ফুলের রানী গোলাপের দেখা পেতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আসছেন। এ কারণে তাদের বিকিকিনিও বেড়েছে।    

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, স্থানীয় যুবক মোহাম্মদ আলী বাহারী রঙের গোলাপ  বাগান করেছেন। মাত্র ছয় মাসে তিনি ওই বাগান থেকে চার লাখ টাকা আয় করেছেন। উচ্চ মূল্যের ফসল গোলাপ আবাদ ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলেও জানান তিনি। 

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী