বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১ |   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাতের আঁধারে শতবর্ষী পুকুর ভরাট 

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২২ ১২ ১২ ০২  

রাতের-আঁধারে-শতবর্ষী-পুকুর-ভরাট 

রাতের-আঁধারে-শতবর্ষী-পুকুর-ভরাট 

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অমান্য করে কুষ্টিয়ার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া হাইস্কুলের শতবর্ষী পুকুরটিতে রাতের আঁধারে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরকারি ওই পুকুরটি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা। তবুও পুকুর ভরাট কাজ অব্যাহত রয়েছে।

রাত গভীর হলেই শুরু হয় বালু ভর্তি ড্রাম ট্রাকের আসা-যাওয়া। সারারাত ট্রাক ভরে বালু এনে ফেলা হচ্ছে পুকুরে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি ছাড়াই এভাবে রাতের আঁধারে গোপনে ভরাট করা হচ্ছে শতবর্ষী পুকুরটি।

জানা গেছে, স্কুলটির প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে আইন অমান্য করে এভাবে রাতের আঁধারে পুকুর ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি খেলার মাঠের জায়গা সম্প্রসারণের জন্যই পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি মার্কেট নির্মাণ করার পাঁয়তারা হিসেবে শতবর্ষী পুকুরটি এভাবে রাতের আঁধারে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া হাইস্কুলের শতবর্ষী পুকুরটিতে রাতের আঁধারে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, বড় পুকুর হলে পরিবেশের ছাড়পত্র নিতাম। এখানে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পরামর্শ নেয়া হয়েছে। স্কুলটি তো শহরে এ ক্ষেত্রে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কেনো পরামর্শ নিলেন? এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা বলেন, অনেকেই অনেক জায়গায় আমাদের নাম বলে। তবে এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

কুষ্টিয়া হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডাক্তার এ কে এম মুনির বলেন, পুকুরটি স্কুলের মধ্যেই রয়েছে। খেলার মাঠ করার জন্যই এটি ভরাট করা হচ্ছে। এটি পুকুর নয়, আগের সভাপতি পোনা মাছ চাষ করার জন্য খনন করেছিলেন।

কুষ্টিয়ার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া হাইস্কুলের শতবর্ষী পুকুরটিতে রাতের আঁধারে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদফতর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক জলাশয় বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। যদি বন্ধ করতে হয় অবশ্যই নিয়ম মেনে অনুমতি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কুষ্টিয়া হাইস্কুলের শতবর্ষী পুকুর ভরাটের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি। লোকজন পাঠিয়ে খবর নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

কুষ্টিয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বলেন, নানা অনিয়মের আঁতুরঘর হচ্ছে কুষ্টিয়া হাইস্কুল। স্কুলটি নিয়ে আমরা মহাবিপদে রয়েছি। শুনেছি মার্কেট নির্মাণের জন্যই পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে এ পুকুরটি প্রয়োজন। তাই পুকুর ভরাট বন্ধ হওয়া উচিত। ভরাট বন্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই জেলাবাসী এর প্রতিবাদ জানাবে। এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী