বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১ |   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম ‘মা’ রাজশাহীর মাসুরা

প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০২২ ২০ ০৮ ০১  

বিশ্বের-দ্বিতীয়-ক্ষুদ্রতম-মা-রাজশাহীর-মাসুরা

বিশ্বের-দ্বিতীয়-ক্ষুদ্রতম-মা-রাজশাহীর-মাসুরা

নাম মাসুরা বেগম। উচ্চতা মাত্র ৩৮ ইঞ্চি (৩ ফুট ২ ইঞ্চি)। এই ক্ষুদ্র উচ্চতা নিয়েও মা হয়েছেন তিনি। গর্ভধারণ থেকে শুরু করে প্রসবের সময় পর্যন্ত মাসুরাকে যে দুইজন চিকিৎসক তাকে দেখেছেন ও পরামর্শ দিয়েছেন, তাদের দাবি, উচ্চতার হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় এবং এশিয়ার ক্ষুদ্রতম মা এই মাসুরা বেগম।

জানা যায়, উচ্চতার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম মা ২৮ ইঞ্চি উচ্চতার আমেরিকার স্টেসি হেরাল্ড। ২০০৬ সালে প্রথম সন্তান জন্ম দেন তিনি। তিন সন্তান জন্ম দেওয়ার পর ২০১৮ সালে মারা যান স্টেসি হেরাল্ড। 

ভারতের গণমাধ্যমের দাবি, ৪১ ইঞ্চি উচ্চতার ভারতের কামাক্ষি চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম উচ্চতার মা। যিনি ২০১১ সালে সফলভাবে বাচ্চা প্রসব করেন। যদিও রাজশাহীর মাসুরা বেগমের উচ্চতা ৩৮ ইঞ্চি, যা কামাক্ষির চেয়েও তিন ইঞ্চি কম। মাসুরা সফলভাবে বাচ্চা প্রসব করেছেন ২০১৩ সালে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকায় কাজের জন্য আসেন গাইবান্ধার মনিরুল ইসলাম। ২০০৩ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন মাসুরা বেগমকে। প্রায় ১০ বছর পর ২০১৩ সালে মাসুরা বেগম একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। গর্ভকালীন শতকষ্টেও মাসুরার পাশে ছিলেন মনিরুল। গর্ভধারণের আট মাস ১০ দিন পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রায় আড়াই কেজি ওজনের কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

মাসুরার আট বছরের কন্যা মরিয়ম এরমধ্যে উচ্চতায় মাকে ছাড়িয়ে ৪১ ইঞ্চি উচ্চতায় পৌঁছেছে। মা-মেয়ের ভালোবাসাও বেশ। এই বয়সেই মাকে নানা কাজে সহযোগিতাও করে মরিয়ম। এবার মরিয়ম পড়ছে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।

মাসুরা বেগমের চিকিৎসক ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি বিভাগের তৎকালীন প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসিনা আক্তার ও আবাসিক সার্জন নুরে আতিয়া লাভলী। তাদের দাবি, এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম মা এই মাসুরা বেগম।

মাসুরা বেগমের স্বামী মনিরুল ইসলাম জানান, প্রায় দেড় যুগ ধরে মাসুরার সঙ্গে ঘর বেঁধে সুখে সংসার করছেন তারা। শারীরিক যোগ্যতা নয়, ভালোবাসা এবং ভালো থাকার জন্য প্রয়োজন সুন্দর মন। মনিরুল ইসলাম ও মাসুরা বেগমের ভালোবাসা এখনো সবার কাছে উদাহরণ।

মাসুরার ভাষ্য, আমি উচ্চতায় খাটো। এজন্য মানুষ আমাকে নিয়ে অনেক সময় অনেক খোটা দেয়। কিন্তু তারপরও আল্লাহর রহমতে স্বামী সংসার নিয়ে ভালোই আছি। আমাদের কিছু টাকা-পয়সার সমস্যা আছে। সরকারের কাছে ঘর চেয়ে আবেদন করেছিলাম। তারা দিবে বলেছে।

এদিকে, বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম ‘মা’ মাসুরা বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। সপ্তাহখানেক হয়েছে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন জেলা প্রশাসক। 

মাসুরার ঘর বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, মাসুরা বেগমের সার্বিক দিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ তিনি ঘর পেয়ে যাবেন। এছাড়া জেলা প্রশাসনের কল্যাণ তহবিল থেকে তাকে কিছু আর্থিক সহযোগিতাও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী