শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১ |   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বগুড়ায় খুনের আসামি গ্রেফতার, রক্তাক্ত সেই চাকু মিলল ডোবায়

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪ ০২ ০২  

বগুড়ায়-খুনের-আসামি-গ্রেফতার-রক্তাক্ত-সেই-চাকু-মিলল-ডোবায়

বগুড়ায়-খুনের-আসামি-গ্রেফতার-রক্তাক্ত-সেই-চাকু-মিলল-ডোবায়

বগুড়ার শাজাহানপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে খুন হন জহুরুল। এ ঘটনার পরপরই অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

তবে অধরা ছিল প্রধান আসামি রাব্বি। অবশেষে সেই রাব্বিকে আটক করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এক ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু।

বুধবার দুপুর পর্যন্ত ২৭ বছরের রাব্বি মিয়াকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এর আগে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া সদরের নূরারী মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। রাব্বি ওই উপজেলার ফুলতলা চককানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম হারুণ প্রামাণিক। রাব্বি পেশায় প্রাইভেটকার চালক। নিহত ৪৩ বছরের জহুরুল ইসলামও একই এলাকার মো. কুদ্দুছ শাহের ছেলে।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাব্বি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। একইসঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রের (চাকু) সন্ধানও দেন তিনি। তার কথা অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতেই ফুলতলা চককানপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সেই চাকু উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র উদ্ধার  অভিযানে আটক থাকা রাব্বিকেও সঙ্গে নেয়া হয়েছিল বলে জানান শাজাহানপুর কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. রাজু কামাল।

অভিযোগ রয়েছে, রাব্বির ছুরিকাঘাতেই মারা গেছেন জহুরুল ইসলাম।

এর আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জহুরুল। ঐদিন রাত পৌনে ১১টার দিকে বগুড়ার ফুলতলা চককানপাড়া এলাকায় ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর পরপরই ওই রাতেই শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাই বাকিরুল ইসলাম।

মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও আরও তিন থেকে চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। ঘটনার পরপরই চককানপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটকও করে পুলিশ। তারা হলেন- রাব্বির বাবা ৫০ বছরের হারুন প্রমাণিক, ৪৩ বছরের সালাম সেলিম ও তার ছেলে সাদিক (২০)। এ তিনজনই চককানপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে চককানপাড়া এলাকায় রাস্তায় প্রাইভেট রেখে ফাঁকা স্থানে বসে মদপান করছিলেন রাব্বিসহ আরও কয়েকজন যুবক। মদপান শেষে তারা প্রাইভেটকারের কাছে এসে দেখেন পার্কিং সুইচ ভাঙা। এ সময় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় নিজ বাড়ির সামনেই আড্ডা দিচ্ছিলেন বাপ্পিসহ আরও কয়েকজন যুবক স্থানীয় যুবক। রাব্বি সন্দেহ করেন যে ওই যুবকরাই তাদের গাড়ির পার্কি সুইচ ভেঙে ফেলেছেন। সন্দেহ থেকে বাপ্পিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন রাব্বিসহ অন্যরা। এতে বাপ্পি ক্ষিপ্ত হয়ে রাব্বির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

পরবর্তীতে বাপ্পির চাচা জহুরুল চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। জহুরুল ঘটনাস্থলে এসে তাদের দ্বন্দ্ব থামিয়ে দিয়ে ঘরে চলে যান। এ সময় বাপ্পিসহ অন্যরাও ঘরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই রাব্বি অন্য আসামিদের নিয়ে জহুরুল ও বাপ্পিকে বাড়ি থেকে ডেকে বের করেন। এ সময় তাদের কথার একপর্যায়ে জহুরুল ও বাপ্পিকে মারধর করা শুরু করেন আসামিরা। ওই সময় রাব্বি নিজের কাছে থাকা চাকু দিয়ে জহুরুলকে আঘাত করেন। পরে শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জহুরুল। এ সময় রাব্বির সঙ্গে তিন থেকে চারজন বহিরাগত যুবক ছিলেন।

শাজাহানপুর কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. রাজু কামাল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে জহুরুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাব্বিকে আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চককানপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক ডোবা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। রাব্বিকে আদালতে পাঠিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। এ মামলার অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী