বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১ |   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাল্টে গেছে হবিগঞ্জের স্বাস্থ্যখাত

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২২ ১৫ ০৩ ০২  

পাল্টে-গেছে-হবিগঞ্জের-স্বাস্থ্যখাত

পাল্টে-গেছে-হবিগঞ্জের-স্বাস্থ্যখাত

৯টি উপজেলা এবং ২৬৩৬ দশমিক ৫৮ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ জেলা। এ জেলায় ১৮ লাখ মানুষের বসবাস। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করেন ৬৯৩ জন মানুষ। আর এসব মানুষের চিকিৎসা সেবার শেষ আশ্রয়স্থল ২৫০ শয্যা জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল হবিগঞ্জ। 

এবার সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে হবিগঞ্জের গণ মানুষের স্বপ্ন ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ’। যা চালু হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে হবিগঞ্জের স্বাস্থ্যখাত। আগে যেখানে সাধারণ কোনো রোগ নির্ণয় বা অপারেশনের জন্য  সিলেট কিং বা ঢাকায় যেতে হতো এবার সেই একই চিকিৎসা হচ্ছে হবিগঞ্জে। ফলে খুশি সাধারণ মানুষ। 

জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ শহরের নিউফিল্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি জনগণের পক্ষে হবিগঞ্জে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবি জানান। এমপি আবু জাহিরের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ঘোষণায় হবিগঞ্জবাসিকে একটি মেডিকেল কলেজ উপহার দেয়ার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি হবিগঞ্জে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলায় রুপান্তর এবং বাল্লা স্থল বন্দর আধুনিকায়নের ঘোষণা দেন। 

২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাহমুদা আক্তার ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেন হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে। ঘোষণার অল্প সময়ের মধ্যে প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়ায় হবিগঞ্জবাসী নতুন আশায় বুক বাঁধেন। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ চালুর কথা ঘোষণা করেন। 

প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়ার পরও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবারো উদ্যোগ নেয়া হয়। একই সঙ্গে অস্থায়ী ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হয় ২৫০ শয্যা হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল ভবনকে। এরপর থেকেই শুরু হয় ভর্তি কার্যক্রম, বদলাতে থাকে হাসপাতালে পরিবেশসহ চিকিৎসা সেবা। 

কথা হয় শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে আসা ফারজানা হক নামে এক তরুণীর সঙ্গে। 

তিনি বলেন, আগে ২৫০ শয্যা হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল নামে থাকলেও শয্যা ছিল মাত্র ১০০টি। কিন্তু এখন পুরো আড়াইশ শয্যার কার্যক্রম চালু হয়েছে। এতে সবাই খুশি। 

চিকিৎসা নিতে আসা রাহিমা খাতুন নামে এক নারী জানান, আগে হাসপাতালে আসলে সিট পাওয়া যেতো না ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নেয়া লাগতো। কিন্তু এখন সেই চিন্তা করা লাগে না। নতুন ভবন হওয়ায় সিট যেমন বেড়েছে তেমনি ডাক্তার নার্সদের সংখ্যা বেড়েছে। সুন্দর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা পেয়ে আমরা খুশি। 

আলী রহমান নামে এক ব্যক্তি জানান, আগে সামান্য রোগী নির্ণয়ের জন্য সিলেট কিংবা ঢাকায় যাওয়া লাগতো। কিন্তু এখন যন্ত্রপাতিসহ ডাক্তার টেকনিশিয়ান থাকায় সেটা লাগে না। হাসপাতালেই সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যায়। এতে আমাদের সময় ও টাকা দুটোই বাঁচে। 

হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি বলেন, বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি হবিগঞ্জে শুধু মেডিকেল কলেজ স্থাপন করেননি, শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলা, হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালকে আড়াইশ’ শয্যায় উন্নীতকরণ, হবিগঞ্জ আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ, সরকারি বৃন্দাবন কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু, ১০ তলা বিশিষ্ট জুডিসিয়াল ভবন নির্মাণ এবং বলভদ্র সেতু চালুকরণসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পাদন করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, হবিগঞ্জবাসী বার বার জাতীয় নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার প্রতি আস্তার প্রমাণ দেন। ফলে হবিগঞ্জবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যদি কোনো দাবি উত্থাপন করে সেই দাবি প্রধানমন্ত্রী অগ্রাহ্য করেন না। এর প্রমাণ হলো উন্নয়নমূলক কাজ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে উত্থাপিত সকল দাবি বাস্তবায়ন হয়েছে।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপতালের তত্বাবধায়ক আমিনুল ইসলাম সরকার জানান, আমরা জনগণের সেবায় নিয়োজিত। জনগণ কিভাবে সঠিক সেবাটুকু পায় সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আগের থেকে এখন হবিগঞ্জ হাসপাতালে সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। 

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী