সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দূষণে বিপর্যস্ত হাড়িদোয়া

প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০২২ ১৬ ০৪ ০১  

দূষণে-বিপর্যস্ত-হাড়িদোয়া

দূষণে-বিপর্যস্ত-হাড়িদোয়া

নরসিংদীর হাড়িদোয়া নদীতে এক সময় বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছের বসবাস ছিল। নদীর পানি ব্যবহার হতো কৃষি কাজে। বর্তমানে কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে পানি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে দূষণ। স্বচ্ছ পানি এখন আলকাতরার মতো কালো রঙ ধারণ করেছে। কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, বাজারের পরিত্যক্ত আর্বজনা প্রতিনিয়ত মিশছে এক সময়ের খরস্রোতা হাড়িদোয়া নদীতে। যার কারণে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে হাড়িদোয়া। 

সরেজমিনে দেখা যায়, এরসঙ্গে মানুষজন নির্বিচারে ময়লা ফেলাতে দূষিত হচ্ছে নদী পাড়ের চারপাশের পরিবেশ। হাড়িদোয়া নদীর পুরাতন থানার ঘাট থেকে হাজিপুর বিজ্র, নরসিংদী বড় বাজার, বীরপুর, আরশীনগর অংশের চারপাশ থেকে নদীতে ফেলা হচ্ছে ময়লা। বিশাল জায়গাজুড়ে ছোট-বড় টিলার মতো স্তূপে পরিণত হয়েছে আবর্জনা। ২০১৮ সালে নরসিংদীর ছয়টি নদী আড়িয়াল খাঁ, হাড়িদোয়া, পাহাড়িয়া, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র খনন প্রকল্পপের কাজ শুরু হয়। কিন্তু এরপরও কমেনি দূষণ।

ছবি দৈনিক প্রভাতী

স্থানীয় বাসিন্দা মিজান ও রুবেল মিয়া বলেন, ছোট বেলায় মাছ শিকার থেকে শুরু করে এই নদীতে গোসল করা ছিল নিত্যদিনের কাজ। বর্তমানে এ নদীটির সব কিছুই শেষ। আশেপাশের বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য প্রতিদিনই নদীতে পড়ছে। পাশেই নরসিংদী বড় বাজার, এখানে প্রায় ১২শ থেকে ১৫শ’র মতো দোকান রয়েছে। এসব দোকানের আর্বজনাও ফেলা হচ্ছে নদীতে। তাছাড়া নদী পাড়ের মানুষ তো নিজেদের ঘরের আবর্জনা ফেলছেনই। 

তারা আরো বলেন, হাড়িদোয়া নদীর পানি থেকে এখন দুর্গন্ধ বের  হয়। নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায় না।

আবুবকর মিয়া নামে এক জেলে বলেন, হাড়িদোয়া নদীতে এক সময় মিঠা পানির মাছের জন্য পুরো নরসিংদী জেলা জুড়ে বিখ্যাত ছিল। খেতে খুব সুস্বাদু ছিল। রুই, কাতলা, মৃগেল, পুটি, ইলিশ, চিতল,চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এ নদীতে পাওয়া যেত। সবাই দল বেঁধে এসে মাছ ধরতাম। এক সময় নদীর পাড়ে বসে মানুষ আড্ডা দিতো। কিন্তু সেই দিন এখন আর  নেই। ময়লা আর আবর্জনা নদীটাকে শেষ করে দিয়েছে। এখন নদীর দুই পাশে বড় বড় টিলার মতো আর্বজনা স্তূপ জমে রয়েছে।

ছবি দৈনিক প্রভাতী

নরসিংদী বড় বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বাবুল সরকার বলেন, নদীতে বাজারের ময়লা ফেলা হচ্ছে, এটা ঠিক। কিন্তু আমরা ময়লা ফেলব কোথায়! আমাদেরকে নির্ধারিত জায়গা দেন, যেখানে আমরা ময়লা ফেলতে পারব।

এ ব্যাপারে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু বলেন, প্রতিদিন ময়লার গাড়ি বাজারে যায়। তারপরও তারা কেন নদীতে ময়লা ফেলেন সেটা আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। নদীর আশেপাশের কলকারখানাগুলোও নদী দূষণ করছে কিনা সেটাও মনিটরিং করা হবে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী