শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ |  আশ্বিন ৫ ১৪৩১ |   ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৪৩ বছরেও হয়নি ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ১৬ ০৪ ০১  

৪৩-বছরেও-হয়নি-ছাত্রদলের-গঠনতন্ত্র

৪৩-বছরেও-হয়নি-ছাত্রদলের-গঠনতন্ত্র

‘উৎপাদনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা’ স্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আশির দশকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্র সংসদে উল্লেখযোগ্য অবস্থান ছিল এ ছাত্র সংগঠনটির। নব্বইয়ের আন্দোলন কিংবা এর পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতে দেখা গেলেও বর্তমান সময়ে সংগঠনটির কোনো ভূমিকাই দৃশ্যমান নয়।

জানা গেছে, ৩০২ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে ২২ জন সহ-সভাপতি, ৮২ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৬২ জন সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকই ৩৮ জন।

জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটির আকারও একইরকম। ‘ঢাউস’ কমিটির কারণে অযোগ্য ও নিষ্ক্রিয়রাও নেতা হচ্ছেন। যে কারণে অতীত ঐহিত্য হারাচ্ছে বিএনপির ‘ভ্যানগার্ড’ খ্যাত এ সহযোগী সংগঠনটি। এছাড়া ৪৩ বছরেও একটি পূর্ণাঙ্গ গঠনতন্ত্র করতে পারেনি তারা। এখন পর্যন্ত ‘খসড়া’ গঠনতন্ত্র দিয়েই চলছে সংগঠনটির কার্যক্রম।

ছাত্রদলের সাবেক নেতারা জানান, ১৯৯৭-৯৮ সালের কমিটির সময় ‘খসড়া’ গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হয়। তবে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হওয়ায় সাংগঠনিক গঠনতন্ত্রের স্থায়ীরূপ দেওয়া হয়নি। বিএনপির শীর্ষ মহল থেকেও কোনো চাপ ছিল না, আবার যারা দায়িত্বে এসেছেন- তাদের কাছেও বিষয়টি উপেক্ষিত থেকেছে। যদিও ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। একটি খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু কমিটিতে তা এখনো পাস হয়নি।

এছাড়া ছাত্রদলকে দেখভালের জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের পদও রয়েছে। কিন্তু ছয় বছর ধরে সে পদও ফাঁকা আছে। এখন ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশে কমিটির নেতারা সারাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

সাবেক ছাত্রনেতারা আরো জানান, জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন, তখন ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরির জন্য একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ১৬১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এরপর এ পর্যন্ত আরো ২৩ বার নতুন কমিটি করা হয়। এর মধ্যে ছয়বার নির্বাচনের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সব কেন্দ্রীয় কমিটির আকার দুইশ’র মধ্যে রাখা হয়। এরপর কমিটির আকার বাড়তে থাকে। ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় কমিটি হয় ২৩৫ সদস্যের, ২০১২ সালে বেড়ে হয় ২৯১ সদস্যের, ২০১৪ সালে আরো বেড়ে হয় ৭৩৬ সদেস্যর। যদিও ২০১৯ সালে আংশিক কমিটি ছিল ৬০ সদস্যের। সবশেষ চলতি বছরের এপ্রিলে ৩০২ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। যদিও এর মধ্যে বিবাহিতসহ নানা অভিযোগে ৩২ জন নেতার পদ স্থগিত রাখা হয়েছে।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি সর্বোচ্চ দেড়শ বা দুইশ’র মধ্যে হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এখন অনেক বড় কমিটি হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিভিন্ন নেতা বা ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করারও হয়তো প্রশ্ন থাকে। তবে কখনো কখনো জরুরি মুহূর্তে সভা করতে হলে একশ বা দেড়শ’ সদস্যের কমিটি হলে ত্রিশ শতাংশ নেতার উপস্থিতিতে জরুরি সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। কিন্তু বড় কমিটি হলে তা হয়তো কষ্ট হবে। কমিটি বড় হলে অনেকে সন্তুষ্ট হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা দেখা দেয়।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর