সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সীতাকুণ্ডে যেন আরেক ‘সুন্দরবন’

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২ ১২ ০১  

সীতাকুণ্ডে-যেন-আরেক-সুন্দরবন

সীতাকুণ্ডে-যেন-আরেক-সুন্দরবন

বিশাল সমুদ্র সৈকত আর কেওড়াবাগানের প্রেমময় সবুজ- দুইয়ে মিলে সৃষ্টি হয়েছে এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ। প্রথম দেখাতে সুন্দরবন মনে হলেও আসলে তা নয়! এটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার নদীর মোহনায় অবস্থিত ‘গুলিয়াখালী সৈকত’। কারো কারো কাছে এটি ‘মুরাদপুর সৈকত’ নামেও পরিচিত।

নদীর মোহনায় অবস্থিত ‘গুলিয়াখালী সৈকত’। ছবি: দৈনিক প্রভাতীপ্রকৃতি ও গঠনগত দিক থেকে গুলিয়াখালী সৈকত অন্যান্য সৈকত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সৈকতের পশ্চিমে দিগন্ত জোড়া জলরাশি, পূর্ব দিকে পাহাড়। কেওড়া বনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল। এই বন সমুদ্রের অনেকটা গভীর পর্যন্ত চলে গেছে। এর পরিবেশ সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মতোই! সৈকত জুড়ে সবুজ গালিচার বিস্তীর্ণ ঘাস এটিকে অন্যান্য সমুদ্র সৈকত থেকে করেছে অন্যন্য। এই সবুজের মাঝ দিয়ে এঁকে বেঁকে গেছে সরু নালা। জোয়ারের সময় পানিতে ভরে উঠে নালাগুলো।

জোয়ারের সময় পানিতে ভরে উঠে নালাগুলো। ছবি: দৈনিক প্রভাতীজোয়ারের সময় সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ার দৃশ্য যেন অন্য রকমের এক অনুভূতি। গুলিয়াখালীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো কেওড়াবন। কেওড়াবনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারপাশে কেওড়াগাছের শ্বাসমূল এবং বিভিন্ন জায়গায় গর্ত রয়েছে। এক একটি গর্তের সামনে গেলে মনে হবে, এই যেন একটা সাপ বা লতা আমাকে আঁকড়ে ধরবে।

জোয়ারের সময় সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ার দৃশ্য যেন অন্য রকমের এক অনুভূতি। ছবি: দৈনিক প্রভাতীচট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার উত্তরে ও সীতাকুণ্ড বাজার থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে গুলিয়াখালী সৈকতের অবস্থান। সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য ছুটির দিনগুলোতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয় এ সৈকতে। তাছাড়া এটিকে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

গুলিয়াখালী সৈকতে যেভাবে যাবেন : চট্টগ্রাম শহর কিংবা ঢাকা থেকে গুলিয়াখালী সৈকত দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে সীতাকুণ্ড বাজার। সেখান থেকে রয়েছে অটোরিকশা।

চট্টগ্রাম শহর থেকে সীতাকুণ্ড: সীতাকুণ্ড এলাকাটি মহাসড়কের আওতাধীন হওয়ায় সেখানে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ। এক্ষেত্রে নগরীর অলংকার মোড় কিংবা একেখান মোড় থেকে লোকাল বাসে যাওয়া যাবে সীতাকুণ্ড। এছাড়া কদমতলী থেকেও বাসে যাওয়া যাবে সীতাকুণ্ড।

প্রকৃতি ও গঠনগত দিক থেকে গুলিয়াখালী সৈকত অন্যান্য সৈকত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ছবি: দৈনিক প্রভাতীঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড: ঢাকার সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, আরামবাগ, মহাখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রামগামী এসি-ননএসি বাস পাওয়া যায়। এসব বাসে খুব সহজেই যাওয়া যাবে সীতাকুণ্ড। 

এছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে গিয়ে নামতে হবে ফেনী রেলস্টেশনে। এরপর রিকশা কিংবা অটোরিকশায় যেতে হবে মহিপাল বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে যাওয়া যাবে সীতাকুণ্ড। 

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে নামলে সেখান থেকেও বাসে যাওয়া যাবে সীতাকুণ্ড। তবে দূরত্ব ও সময় বিবেচনায় ফেনী রেলস্টেশনে নেমে যাওয়া ভালো।

 গুলিয়াখালী সৈকত অন্যান্য সৈকত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ছবি: দৈনিক প্রভাতীকোথায় থাকবেন
সীতাকুণ্ড সদরে রাত্রিযাপনের জন্য একাধিক মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়া উন্নতমানের হোটেলে থাকতে চাইলে যেতে হবে চট্টগ্রাম শহরের অলংকার কিংবা আগ্রাবাদ এলাকায়। এছাড়াও জিইসির মোড়, স্টেশন রোড ও নিউমার্কেট এলাকায় একাধিক উন্নতমানের হোটেল রয়েছে।

কোথায় খাবেন
দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারের জন্য সীতাকুণ্ডেই একাধিক মাঝারি মানের খাবারের হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে আল-আমিন নামে একটি রেস্টুরেন্টের বেশ সুনাম রয়েছে।  

প্রকৃতির এ এক অপরূপ লীলাভূমি। ছবি: দৈনিক প্রভাতীআরো যা দেখতে পারেন
সীতাকুণ্ডের পর্যটন এলাকাগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে- উপকূলীয় বনাঞ্চল, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক, সহস্রধারা ঝরনা, সুপ্তধারা ঝরনা, খৈয়াছড়া ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝরনা ইত্যাদি।
 

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর