বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১ |   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যেসব মামলা

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২২ ১১ ১১ ০২  

বিএনপির-সিনিয়র-নেতাদের-বিরুদ্ধে-দুর্নীতির-যেসব-মামলা

বিএনপির-সিনিয়র-নেতাদের-বিরুদ্ধে-দুর্নীতির-যেসব-মামলা

দুর্নীতি, দুঃশাসন, কালো টাকা ও আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বিএনপির বহু নেতার বিরুদ্ধে। ক্ষমতায় থাকাকালীন তারা করেছেন সীমাহীন দুর্নীতি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুধু দুর্নীতিই নয়, লুটপাট, কমিশন বাণিজ্য, উন্নয়নের নামে বরাদ্দের টাকা ভাগাভাগি, অর্থের বিনিময়ে দেশে অবাধে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার প্রসার ঘটানোর অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

এসব কারণে দেশ ও বিদেশে দুর্নীতির বরপুত্র ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী দুর্নীতিবাজ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছেন বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। পাশাপাশি জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছিলেন তারা।

এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৫টি মামলা আছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালে কয়েকটি মামলার বিচারকার্যও শুরু হয়েছে। সব মামলাতেই তিনি জামিনে আছেন। এসব মামলায় সপ্তাহে দুইদিন তাকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে বর্তমানে ১১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ওয়ান-ইলেভেনের সময় ৮টি এবং বর্তমান সরকারের আমলে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে দুদকের করা মামলায় তিনি গ্রেফতার হয়ে জেলও খাটেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় করা মামলাগুলো বিচারাধীন। বর্তমান সরকারের আমলে দেওয়া প্রায় সব মামলার চার্জশিট হয়েছে। বিচারকাজও শুরু হয়েছে কয়েকটির।

তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতারও একটি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। ওমরাহ পালনের নামে সৌদি আরবের মক্কায় গিয়ে পাকিস্থানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর এজেন্টের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন মর্মে মামলা চলমান। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যায়।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৯৬টি মামলা রয়েছে। অবৈধ প্লট বরাদ্দ দিয়ে সরকারের সাড়ে ১৫ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধনের অভিযোগে তার নাম চার্জশিটে যুক্ত করেছে দুদক।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ৪০টি মামলার কয়েকটিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার নামে ১৯টি ও সালাহউদ্দিন আহমেদের নামে ৪৭টি মামলা রয়েছে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ৭টি, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর নামে ৩৭টি, এজেডএম জাহিদ হোসেন ১৫টি, বরকতউল্লা বুলুর বিরুদ্ধে ৮৮টি, আবদুল আউয়াল মিন্টুর নামে ১২টি, শামসুজ্জামায়ান দুদুর ২২টি, শওকত মাহমুদের ৪৫টি, আবদুল্লাহ আল নোমানের ১৩টি, সেলিমা রহমানের ১১টি, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের ১৮টি, মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন আহমেদের নামে ৬টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের নামে ১২৬টি, জয়নুল আবদিন ফারুকের ৩১টি, মিজানুর রহমান মিনুর ১৩টি, দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নামে ৫২টি, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নামে ১৩০টি, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ১১০টি, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে ৫০টি, ফজলুল হক মিলনের ১২টি ও নাদিম মোস্তফার নামে ২৭টি মামলা রয়েছে।

এসব মামলার বেশিরভাগেরই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাবেক যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের নামে ২১৫টি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর বিরুদ্ধে ২১২টি মামলা রয়েছে। প্রয়াত স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সফিউল বারী বাবুর নামে ৩১টি মামলা রয়েছে। এসব নেতার বিরুদ্ধে দায়ের করা অনেক মামলায় এরই মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বিচারকাজও চলছে।

২০১৮ সালের এপ্রিলের শুরুতে বিএনপির শীর্ষ ৮ নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ১২৫ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নামে দুদক। মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে তারা ১২৫ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া শীর্ষ এক ডজনের বেশি নেতার বিরুদ্ধেও সচল রয়েছে বিভিন্ন দুর্নীতির মামলা।

এদিকে দুদকের মামলায় দণ্ডিত হয়ে এখন সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া। দলের যেসব নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান ও আবদুল আওয়াল মিন্টু, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, এম মোর্শেদ খানের ছেলে ফয়সাল মোর্শেদ খান, ঢাকা মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ অন্যান্য।

দুদকের সই করা চিঠিতে আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে মানি লন্ডারিং ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে ১২৫ কোটি টাকা লেনদেনসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর