মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১ |   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পারিবারিক সংগঠনে পরিণত হচ্ছে বিএনপি

প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২২ ১৭ ০৫ ০১  

পারিবারিক-সংগঠনে-পরিণত-হচ্ছে-বিএনপি

পারিবারিক-সংগঠনে-পরিণত-হচ্ছে-বিএনপি

বিএনপিকে চাঙ্গা করতে জিয়া পরিবারমুক্ত করার জন্য বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু জিয়া পরিবারমুক্ত তো নয়ই বরং জিয়া পরিবারের আরো অন্তত তিন সদস্য এখন বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে ঢোকার অপেক্ষায়। 

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুতেই স্থায়ী কমিটিতে খালেদা জিয়ার আত্মীয়-স্বজনদের অন্তত তিনজন ঢুকতে যাচ্ছেন বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। 

এদের মধ্যে রয়েছেন- খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তারেক জিয়ার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং প্রয়াত কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। 

এই তিনজন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হলে বিএনপি একটি পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সংখ্যা স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য গুরুতর অসুস্থ থাকায় তারা দলীয় কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না। 

এর আগে স্থায়ী কমিটিতে ইকবাল মাহমুদ টুকু, সেলিনা রহমানের মতো কয়েকজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও বাকি শূন্যস্থানগুলো পূরণ হয়নি। এখন স্থায়ী কমিটিতে এ তিনজনকে নেয়ার বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। 

বিএনপির সিনিয়র নেতারা বিষয়টি সম্পর্কে জানান, তারা এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলতে রাজি না।

দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। আর এ হতাশা কাটাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা বড় ধরনের আন্দোলন চান। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনো আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে এখনই যেতে রাজি না। বরং তারা সংগঠন পুনর্গঠনের বিষয়টিকেই এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। আর সংগঠন পুনর্গঠনের জন্য স্থায়ী কমিটিকে সক্রিয় করার কথা বলা হচ্ছে। আর এ স্থায়ী কমিটির সদস্য করার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার আত্মীয়দের তিনজনকে স্থায়ী কমিতে ঢুকানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন> ষড়যন্ত্র ১৯৭১ থেকে শুরু হয়েছে, এখনো চলছে: মায়া চৌধুরী

গত কিছুদিন ধরেই বিএনপিকে পশ্চিমা দেশগুলো পরিবারতন্ত্র থেকে নেতৃত্ব মুক্ত করার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। তারা তারেক রহমানকে আপাতত মূল নেতৃত্ব থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু এ সমস্ত পরামর্শের হিতে বিপরীত ফল হল। এখন স্থায়ী কমিটি পুরোটাই জিয়া পরিবারের দখলে যাবে। আগে স্থায়ী কমিটির নেতারা টুকটাক কথা বলতে পারতেন, কিছু পরামর্শ দিতে পারতেন, এখন সেই পরামর্শের পথ বন্ধ হয়ে যাবে বলে বিএনপির অনেক নেতারা মনে করছেন। 

কেন এই তিনজনকে নেয়া হচ্ছে- এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছেন না। বিএনপির আগামী নেতা তারেক জিয়া, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু এই রাজনৈতিক দলটি কেবল রাজনৈতিক দল নয়, একটি ব্যবসাকেন্দ্রও বটে। আর এ কারণে যদি খালেদা জিয়ার কিছু হয় তাহলে ভাইদের ভাগ কি হবে, তাদের যেন একটা কিছু করার থাকে সেজন্য তার ভাই শামীম এস্কান্দারকে স্থায়ী কমিটিতে নেয়া হচ্ছে। আবার অন্যদিকে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রীও স্থায়ী কমিটিতে থাকতে চান। স্থায়ী কমিটিতে থাকলে বিভিন্ন আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নেয়া যাবে, দলের ধনী নেতা এবং সদস্যরা সহায়তা করবেন। যেহেতু শর্মিলা রহমান সিঁথিকে স্থায়ী কমিটিতে নেয়ার বিষয়টি বেগম খালেদা জিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাই পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ডা. জোবাইদাকে স্থায়ী কমিটিতে নেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ আগামী দিনগুলোতে এ তিনজন সংগঠনটিকে যতটুকু সোচ্ছার না করবে, এই সংগঠনটিকে ব্যবহার করে আয় রোজগারের উপায় খুঁজবে। ফলে যারা ত্যাগী-পরীক্ষিত নেতা বিএনপিতে রয়েছেন তারা কিছুটা হতাশই হয়েছেন। 

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর