বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১ |   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দেশের রাজনীতিতে ফের তৃতীয় শক্তির উত্থানের অপচেষ্টা বিএনপির

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২২ ১৭ ০৫ ০২  

দেশের-রাজনীতিতে-ফের-তৃতীয়-শক্তির-উত্থানের-অপচেষ্টা-বিএনপির

দেশের-রাজনীতিতে-ফের-তৃতীয়-শক্তির-উত্থানের-অপচেষ্টা-বিএনপির

রাজনৈতিক অঙ্গনে একদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। অপরপক্ষে, বিএনপি বলছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা আগামীতে আর কোনো নির্বাচনে যাবে না। এই দুই ধারায় রাজনীতি এখন বিভক্ত। কিন্তু এর মধ্যে একটি তৃতীয় ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ক্রমশ এই তৃতীয় ধারাটি পুঞ্জীভূত রূপ গ্রহণ করছে। এই তৃতীয় ধারা একটি জাতীয় সরকারের দাবি উত্থাপন করছে।

সম্প্রতি এলডিপি নেতা অলি আহমেদের সঙ্গে জেএসডি নেতা আ স ম আব্দুর রবের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে জাতীয় সরকার নিয়ে আলোচনা হয়। 

এর আগে জাতীয় সরকারের দাবি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ। এছাড়া কল্যাণ পার্টির নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম জাতীয় সরকারের দাবি উত্থাপন করেছিলেন।

কিছুদিন আগে নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নাও জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জাতীয় সরকারের দাবি তাদের নয়। তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।

আওয়ামী লীগ সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছে, জাতীয় সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনোটাই হবে না, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলো কেন জাতীয় সরকারের দাবি এখন উত্থাপন করেছে। ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর একটি তাৎপর্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই দলগুলো আকৃতিতে ছোট হলেও এই দলগুলোর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা রয়েছেন। যেমন- এলডিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে খুবই শীর্ণ, গুরুত্বহীন। কিন্তু অলি আহমেদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। একইভাবে জেএসডি’র আ স ম আব্দুর রবও রাজনীতিতে একজন পরিচিত মুখ। নতুন গড়ে ওঠা গণঅধিকার পরিষদ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সরকারের দাবির ব্যাপারে কোনোরকম মতামত দেয়নি। কিন্তু এই দাবিকে উপেক্ষা করছে এমনটিও নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন আস্তে আস্তে একটি জাতীয় সরকারের দাবিকে সামনে আনার চেষ্টা চলছে এবং আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে রাজনৈতিক শক্তিগুলো এই জাতীয় সরকারের দাবিকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- জাতীয় সরকারের দাবি কি শুধুমাত্র অলি আহমেদ, আ স ম আব্দুর রব কিংবা জাফরুল্লাহর? নাকি এর পেছনে অন্য কোনো মদদ রয়েছে। একটু অনুসন্ধান করলেই দেখা যায়, যে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সরকারের দাবি উত্থাপন করছে তাদের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর এবং বিদেশি দূতাবাসগুলোর একটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। 

অনেকেই মনে করেন, তাহলে জাতীয় সরকারের দাবির পেছনে কি বিদেশি দূতাবাসগুলোর হাত রয়েছে?

কয়েকদিন আগেই অলি আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। একই অবস্থা আ স ম আব্দুর রবের ক্ষেত্রেও। অন্যদিকে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম তো বলে-কয়ে বিদেশি দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে একটি সমঝোতার আবহ তৈরি করার জন্যই কি জাতীয় সরকারের দাবি তোলা হচ্ছে নাকি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে- রাজনীতিতে এই প্রশ্নগুলো ক্রমশ এখন বড় হচ্ছে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর