সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘুরে আসুন ডাওহিল, নির্জন পাহাড়ে দেখা মিলবে গলা কাটা ভূতের!

প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২২ ১৩ ০১ ০২  

ঘুরে-আসুন-ডাওহিল-নির্জন-পাহাড়ে-দেখা-মিলবে-গলা-কাটা-ভূতের

ঘুরে-আসুন-ডাওহিল-নির্জন-পাহাড়ে-দেখা-মিলবে-গলা-কাটা-ভূতের

একবার ভাবুন তো নির্জন পাহাড় ধরে আপনি হাঁটছেন, মেঘ এসে আপনার সঙ্গী হয়েছে। হঠাৎ সামনে দেখলেন একটা বাচ্চা ছেলেও হাঁটছে, কিন্তু তার মাথাই নেই! বা হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলেন এমন এক রাস্তায় যেটার নামই ‘ডেথ রোড’। মানে যাকে বলে মৃত্যুর হাতছানি রয়েছে এখানে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সেরা দশ ভৌতিক জায়গা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে কার্শিয়াংয়ের ডাওহিল। 

আসলে ভূতুড়ে এই গা ছমছমে ভাবটাই কিন্তু হবে এখানে ঘোরার আনন্দ। সারিসারি পাইন গাছ। এত ঘন জঙ্গল যে দিনেও কেমন একটা আলো আঁধারি কাজ করে এখানে। গাড়ি-ঘোড়া তো নেই-ই, মানুষজনও খুব কম। ডাওহিলে কোনো হোটেলও নেই; তবে কিছু হোম স্টে রয়েছে। আর কেউ কেউ দার্জিলিং বা কার্শিয়াং শহর থেকে এখানে আসেন গাড়ি নিয়ে ঘুরতে। তাই ডাওহিলে থাকলে নর্থ বেঙ্গলের নির্জনতা উপভোগ করতে পারবেন প্রাণ ভরে। সঙ্গে রয়েছে পাখির কলকাকলি। নাম না জানা অর্কিড।

বলা হয় অতিপ্রাকৃতিক অনুভব করেছেন অনেক পর্যটকই এই ডাওহিলে। বিশেষ করে ডাওহিলের রাস্তা থেকে ফরেস্ট অফিসে যাওয়ার রাস্তা যেটা ডেথ রোড নামে পরিচিত সেটা। কেউ এখানে একটা ছোট বাচ্চার ভূত দেখেছেন যার মাথা নেই! কেউ দেখেছেন এক বুড়িকে, যে হঠাৎ গায়েব হয়ে যায়। কারও মনে হয়েছে একটা অদৃশ্য শক্তি যেন তাকে ফলো করছে।

এমনকী এও শোনা গেছে, কিছু মানুষ নাকি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। যদিও এসবই শোনা কথা। লোকাল মানুষরা এখানে কিচ্ছু দেখেননি। এমনকী ডাওহিলে রয়েছে দুটো বিখ্যাত স্কুল, যেখানের ছোট ছোট পড়ুয়ারা কখনো ভূত দেখেননি। এমনকী পর্যটকদেরও প্রকাশ্যে ভূতের গল্প বলতে শোনা যায়নি।

ডাও হিলের আসল সৌন্দর্য এখানের গা ছমছমে পাইন ঘেরা রাস্তা। কুয়াশায় ঘেরা আধো অন্ধকার ভাব। হেঁটে হেঁটে দেখে নিন ডিয়ার পার্ক, ডাওহিল পার্ক, ডাওহিল ফরেস্ট মিউজিয়াম, ডাওহিল স্কুল, ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুল। পায়ে হেঁটে এগুলো দেখতে দুই ঘণ্টার মতো লাগবে। ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুলের পিছনে রয়েছে ডাওহিল চার্চ। সেই কবে এই চার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভগ্নপ্রায় এই চার্চে ঢোকার অনুমতি নেই। তবে বাইরে থেকে দেখতেই প্রতি বছর আসেন হাজার হাজার টুরিস্ট এখানে।

কার্শিয়াংয়ের ডাওহিলের স্কুল। ছবি: সংগৃহীত

কার্শিয়াংয়ের টুরিস্ট স্পটগুলোও দেখে নিতে পারবেন ডাও হিলে থেকেই। রয়েছে হনুমান টক। ভগবান হনুমানের ৪০ ফুট উঁচু একটা স্ট্যাচু। এখান থেকে দুর্দান্ত ভিউ পাওয়া যায়। পাশে লেখা আছে ‘I Love Kurseong’। 

ইগলস ক্র্যাগ দেখুন। খুব সুন্দর একটা পার্ক। ফুলে ভরা থাকে গোটা শীতকাল। এটাও কার্শিয়াংয়ের একটা ভিউ পয়েন্ট। এরপর চলে যান গিড্ডা পাহাড়ে। উপর থেকে দেখুন আঁকা-বাঁকা রাস্তার বুকে টয়ট্রেনের লাইন। কপাল ভালো থাকলে একটা টয়ট্রেন দেখারও সুযোগ পাবেন। 

আপনি যদি ভোজন রসিক হন তাহলে চলে যান মার্গারেট ডেকে। পাহাড়ের গায়ে ঝুলন্ত এক ক্যাফে। খাঁটি দার্জিলিং টি-র স্বাদ নিতে চাইলে একবার আপনাকে মার্গারেট ডেক যেতেই হবে। এখানে কেক, কুকিজের স্বাদও অপূর্ব। ক্যাফের বাইরের বারান্দায় বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে কখন যে সময় কেটে যাবে নিজেও বুঝতে পারবেন না। 

কীভাবে যাবেন

কলকাতা থেকে ট্রেনে পৌঁছে যান নিউ জলপাইগুড়ি। ফ্লাইট ধরে যেতে পারেন বাগডোগরা বিমানবন্দরেও। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে চলে আসুন ডাও হিলে। শেয়ার গাড়ি করেও আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে কার্শিয়াং স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে হোমস্টের গাড়িতে ডাওহিল। রিজার্ভ গাড়িও নিতে পারবেন; ভাড়া পড়বে ৮০০ টাকার মতো। আর এনজেপি থেকে সোজা আসতে চাইলে গাড়ি ভাড়া লাগবে সর্বোচ্চ ৩৫০০ টাকা।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর