রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ |  আশ্বিন ৬ ১৪৩১ |   ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অসুস্থ খালেদাকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন তারেক

প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২২ ১৮ ০৬ ০১  

অসুস্থ-খালেদাকে-ট্রাম্পকার্ড-হিসেবে-ব্যবহার-করতে-চাইছেন-তারেক

অসুস্থ-খালেদাকে-ট্রাম্পকার্ড-হিসেবে-ব্যবহার-করতে-চাইছেন-তারেক

রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন বিএনপি। দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সরকার উৎখাতে খালেদা জিয়াকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এরই মধ্যে তিনি বিএনপি নেতাদের কাছে তার এই মনোভাবের কথা খোলামেলাভাবেই বলেছেন।

সূত্র বলছে, তারেক রহমান বিএনপি নেতাদের বলছেন- খালেদা জিয়ার কিছু না হওয়া পর্যন্ত তাকে হাসপাতালেই রাখার চেষ্টা করতে। খালেদা সুস্থও হয়ে উঠলে হাসপাতালে থাকার প্রয়োজনীয়তাও না থাকলেও তাকে রাখার চেষ্টা করতে হবে। যতদিন না বিএনপির কার্যোদ্ধার হচ্ছে।

দলীয় সূত্রটি বলছে, তারেক রহমান বিএনপির অন্তত দুজন নেতাকে বলেছেন, চেয়ারপার্সন যতদিন হাসপাতালে থাকবে ততদিনই বিএনপির লাভ, এই লাভের হিসাবও দিয়েছেন তারেক।

বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, তারেক মনে করেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকলে মানবিক দিক বিবেচনা করেই বিএনপির আন্দোলনে সরকার বাধা দেবে না। কারণ এতে জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে। জনগণ বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিতে দেখেছে। এ কারণেই খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে আন্দোলন করার পক্ষে তারেক।

যদিও এভারকেয়ার হাসপাতাল সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার যতটা উন্নতি সম্ভব, ততটা রিকভার করেছেন তিনি। এমনকি খালেদা জিয়ার অবস্থা আগের চেয়ে অবনতি ঘটেনি, স্টেবল পজিশন বলা যায়।

এরকম পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে আর কতদিন হাসপাতালে রাখা হবে এটি একটি বড় প্রশ্ন। কিন্তু তারেক রহমান সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে হাসপাতালেই রাখতে হবে।

তারেক রহমানের দ্বিতীয় পরিকল্পনাটি আরো ভয়ঙ্কর। তারেক তার দলের নেতাদেরকে বলছেন, খালেদা জিয়ার যদি হাসপাতালে কিছু হয়ে যায়, তাহলে এটি সরকারের বিপক্ষে যাবে। জনগণকে বোঝাতে হবে, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়া মারা গেছেন- এটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ধারণাটি যদি জনগণের মধ্যে ঢোকানো যায় তাহলে দ্রুত সরকার পতনের আন্দোলনকে বেগবান করা যাবে।

তারেক রহমানের তৃতীয় পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে- এখন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্যও বিদেশে যাওয়ার জন্য কোনো দেনদরবার করা হবে না। অর্থাৎ তারেকের মামা শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে আবেদন করেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে সহানুভূতি কামনা করছেন, পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য ছোটাছুটি-দৌড়াদৌড়ি করছেন, এসব না করার জন্য তারেক রহমানের নির্দেশ দিয়েছেন।

বিএনপির ঢাকা মহানগরের একজন প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, আমরা যদি সরকারের কাছেই খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা এবং মুক্তির জন্য আবেদন করি, তাহলে সরকার পতন আমরা কীভাবে চাইবো? দুটি দাবিই তো সাংঘর্ষিক। কিন্তু তারেক রহমান তাদেরকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়েছেন। অর্থাৎ খালেদা জিয়া বিদেশে যাক সেটি আসলে তারেক চান না। খালেদা জিয়া বাসায় ফিরে যাক এবং তিনি সুস্থ হোক সেটিও তিনি চান না। বরং অসুস্থ খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে তার মৃত্যুর অপেক্ষা করা এবং খালেদা জিয়ার লাশ নিয়ে রাজনীতি করাই এখন তারেকের প্রধান পরিকল্পনা।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর