শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১ |   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনৈতিক পরিচয় অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার তারেকের

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫ ০৩ ০২  

রাজনৈতিক-পরিচয়-অর্থ-উপার্জনের-হাতিয়ার-তারেকের

রাজনৈতিক-পরিচয়-অর্থ-উপার্জনের-হাতিয়ার-তারেকের

লন্ডনে একটি প্রাসাদসম বাড়ি, তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি ও বিলাসিতায় একাকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবনযাপন। শুধু এসব সম্পদে সীমাবদ্ধ নয়, তিনি লন্ডনে গড়েছেন একটি কোম্পানি। রাজনৈতিক পরিচয়ে অর্জিত টাকা থেকেই তিনি এসব সম্পদ ও কোম্পানি গড়েছেন।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে তারেক রহমান সম্পর্কে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।

জানা গেছে, তারেক রহমান কাগজে-কলমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।  প্রাসাদসম বাড়িসহ বিলাসবহুল তিনটি গাড়ি ও অন্যান্য ব্যয় তারেক রহমানকে লন্ডনে রাজকীয় পর্যায়ে নিয়েছে। তবে তার এত সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ব্রিটিশ কোম্পানি হাউজের তথ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, তারেক জিয়া এখন ব্রিটিশ নাগরিক। বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে ২০০৭ সালে তারেক লন্ডনে এসেছিলেন। এরপর তিনি ২০১৪ সালের পর বাংলাদেশি পাসপোর্ট আর নবায়ন করেননি। এ সময় তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। ২০১৮ সালের কোনো এক সময় তিনি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।

লন্ডনে এসে তারেক রহমান হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ঐ প্রতিষ্ঠানে তিনিই একমাত্র পরিচালক। এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, জালিয়াতি, প্রতারণাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কোম্পানির কর্ণধার হিসেবে তারেক রহমান কোম্পানি হাউজে যে তথ্য দিয়েছেন তাতে তিনি নিজেকে ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কোম্পানিটি আসলে একটি কাগজে-কলমের কোম্পানি। এটিকে একটি পিআর ফার্ম হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু মূল বিষয় হলো যে, তার অবৈধ অর্থকে বৈধ করাই এ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কাজ। সম্প্রতি ব্রিটিশ অর্থ বিভাগ এ কোম্পানির ব্যাপারে অনুসন্ধান করেছে। তারেক রহমানের একটি অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছিল। কিন্তু অদৃশ্যভাবে তারেক রহমান সেই অ্যাকাউন্টটিও পরে ছাড়িয়ে নিয়েছেন। হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কোম্পানির কর্মতৎপরতা সম্পর্কেও কোনো কিছু জানা যায়নি।

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী কেউ যদি স্থায়ীভাবে ১০ বছর বসবাস করেন তাহলে তিনি সেদেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। সে আবেদন বিবেচনা করা না করা ব্রিটিশ সরকারের বিষয়। কাজেই ২০০৭ সালে আসা তারেক জিয়ার ২০১৭ সালে ১০ বছর পূর্ণ হয় এবং তারপর তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন।

এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে যে, ২০১৭ সালের শেষদিকে তিনি প্রথম তার কন্যা জাইমা রহমানের নামে আবেদন করেন। তারপর তিনি তার স্ত্রীর নামে স্থায়ী বসবাসের আবেদন করেন এবং সর্বশেষ তারেক জিয়া এ আবেদন করেছেন। তবে একজন দণ্ডিত অপরাধীকে ব্রিটিশ সরকার নাগরিকত্ব দিলো কীভাবে সেটি একটি প্রশ্ন।

তবে একজন ব্রিটিশ আইনজীবী বলেছেন, সম্ভবত তিনি নাগরিকত্ব পাননি, পিআর পেয়েছেন। পিআর মানে পার্মানেন্ট রেসিডেন্স। কোনো ব্যক্তি স্থায়ীভাবে বসবাস করলে তাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়, সেটি হলো পিআর। তবে তারেক জিয়ার এ তথ্য প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে তার আর ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তারেক রহমান বিদেশে টাকা পাচারে জড়িত রয়েছেন। পাচারকৃত টাকায় তিনি লন্ডনে সম্পদ গড়েছেন। মনোনয়ন বাণিজ্য, দলীয় ফান্ড সংগ্রহ করেই তার বিলাসবহুল জীবন চলছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের পদ ব্যবহার করে তারেক রহমান এসব সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

Provaati
দৈনিক প্রভাতী
এই বিভাগের আরো খবর