সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রহস্যময় সে গুহা, আজও পৌঁছায়নি সূর্যের আলো

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩ ০১ ০১  

রহস্যময়-সে-গুহা-আজও-পৌঁছায়নি-সূর্যের-আলো

রহস্যময়-সে-গুহা-আজও-পৌঁছায়নি-সূর্যের-আলো

এমন এক গুহা, যেখানে আজও সূর্যের আলো পৌঁছায়নি। টর্চ বা মশাল নিয়ে ভেতরে ঢুকতে হয় সবার। একবার ঢুকলে গুহার অন্য প্রান্তের মুখে পৌঁছনো বেশ পরিশ্রমের কাজ। কখনো মাথা নিচু করে চলতে হবে, কখনও পায় ঠেকবে ঠাণ্ডা জলের স্রোত। পাথরের উপর দিয়ে হাটতে হবে গুহার মধ্যে। যে কোনো মুহূর্তে সম্ভাবনা রয়েছে পা পিছলে পড়ার। রহস্যময় এ গুহায় চলতে গেলে বেশ কষ্টই হবে। তবুও গুহাটি দেখতে সেখানে ছুটে যায় এডভেঞ্চার প্রিয়রা। গুহাটির নাম আলুটিলা। অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত গুহাটি দেখে যে কারোরই ভালো লাগতে বাধ্য।

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় এই গুহার অবস্থান। খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে আলুটিলা গুহা। এই জেলার সবথেকে উঁচু পর্বত আলুটিলা। আগে পর্বতটির নাম ছিল আরবারি। এখানে প্রচুর বুনো আলু জন্মায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে খাবারের অভাব দেখা দিয়েছিল খাগড়াছড়িতে। তখন স্থানীয় মানুষরা এখানকার বুনো আলু খেয়ে প্রাণ বাঁচাতেন। সেই থেকে পর্বতটির নাম হয়ে গিয়েছে আলুটিলা। খাগড়াছড়ি শহরের প্রায় সবটাই দেখা যায় এই পর্বত থেকে। তবে এই পর্বতের প্রধান আকর্ষণ আলুটিলা গুহা।

রহস্যময় গুহা আলুটিলা। ছবি : সংগৃহীত

খাগড়াছড়ি সদর থেকে আলুটিলা গুহা যাওয়ার পথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রকৃতির নানা দৃশ্য। ঘন অরণ্যে ঘেরা এই গুহা। স্থানীয় লোকদের কাছে এটি ‘মাতাই হাকড়’ বা ‘দেবতার গুহা’ নামে পরিচিত। গুহায় ঢুকতে গেলে মূল ফটক থেকে টিকিট কেটে নিতে হয়। এরপর খানিকটা পাহাড়ি রাস্তা হাঁটলে তবে গুহার মুখে পৌঁছনো যাবে। ভিতরে ঢোকার আগে সংগ্রহ করে নিতে হবে মশাল কিংবা মাথায় হেডলাইট লাগানো টুপি। এগুলো না থাকলে অবশ্য টর্চ কিংবা মোবাইল ফোনের টর্চ দিয়েও কাজ চালানো যায়। পা পিছলে যায়, এমন কোনো জুতো পরা চলবে না।

অনেকটা সুড়ঙ্গের মতো এই গুহার ভিতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। তবে, কোনো ক্ষতিকর জীবজন্তুর ভয় এখানে নেই। সূর্যের আলো পৌঁছতে পারে না বলে রহস্যময় হয়ে থাকে এই গুহা। নিচ দিয়ে একটা ঝরনা বয়ে গিয়েছে, তাই সাবধানে হাঁটতে হয়। ভেতর দিয়ে খানিকটা যাওয়ার পর দেখা যাবে, দুদিকে দুটো রাস্তা চলে গিয়েছে। তার মধ্যে একটি রাস্তা বন্ধ। কথিত আছে সেখানে রয়েছে অতিপ্রাকৃত কিছুর বসতি।

রহস্যময় গুহা আলুটিলা। ছবি : সংগৃহীত

গুহাটির মোট দৈর্ঘ্য ৩৫০ ফুট। গুহার এপাশ থেকে ওপাশে যেতে সময় লাগে মোটামুটি ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতো। গুহার উচ্চতা অনেক জায়গাতেই খুবই কম, তাই হাঁটতে হয় মাথা নিচু করে। সোজা রাস্তাটি ধরে হাঁটলে গুহার অন্য প্রান্তে পৌঁছনো যাবে। পর্যটকদের কেউ কেউ গুহার ভেতরে মশাল এবং অন্যান্য জিনিস ফেলে নোংরা করে। তা সত্ত্বেও, গুহার মধ্যে ভ্রমণের রোমাঞ্চ এবং চারদিকের অপরূপ প্রকৃতি যে কোনো মানুষকে বাকরুদ্ধ করে দেবে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর