রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ |  আশ্বিন ৭ ১৪৩১ |   ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

তারেকের নেতৃত্বে আস্থা হারাচ্ছেন কর্মী ও সমর্থকরা

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২২ ১৪ ০২ ০১  

তারেকের-নেতৃত্বে-আস্থা-হারাচ্ছেন-কর্মী-ও-সমর্থকরা

তারেকের-নেতৃত্বে-আস্থা-হারাচ্ছেন-কর্মী-ও-সমর্থকরা

বিভিন্ন অপরাধের কারণে লন্ডনে পলাতক ও দণ্ডিত বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আস্থা হারাচ্ছেন কর্মী ও সমর্থকরা। যার ফলে বিএনপির নাম জনগণের মুখ থেকে মুছে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত খাম্বা দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচার, হত্যাকাণ্ড, বিরোধীদলকে দমন-পীড়নসহ নানা অপরাধের কারণে জনসাধারণের কাছে ত্রাস ছিলেন তারেক রহমান। তখন পর্যন্ত দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা তাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে আদালতে সব অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তারেকের প্রতি আস্থা হারাতে শুরু করেন কর্মী-সমর্থকরা।

২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়। সেই আন্দোলনে মানুষকে পুড়িয়ে মারার পর তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি হয় কর্মী ও সমর্থকদের। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আরো বড় ভুল করেছিল বিএনপি। সেই ভুলের পেছনে প্রধান কারিগর ছিলেন তারেক রহমান। কারণ জামায়াতে ইসলামী তারেককে ভুলভাল বুঝিয়েছিল। আর তারেক রহমান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে না যেতে চাপ দেন। এজন্যই নির্বাচনে না গিয়ে কর্মী-সমর্থকদের কষ্টের কারণ হন তারেক রহমান।

নাম প্রকাশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সাজা ঘোষণার পর কর্মী-সমর্থকরা হতাশ হন। তার জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ ভয়ানক অপরাধ কর্মকাণ্ড জেনে ক্ষুব্ধ হন তারা। এরপর এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাজার খবর আমাদের সঙ্গে সমর্থকদেরও হতাশ করে। 

তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর অর্থপাচারের অভিযোগে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঐ মামলায় ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছর কারাদণ্ড এবং ৪০ কোটি অর্থদণ্ড দেন আদালত। এরপরে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর উচ্চ আদালত ২০১৬ সালের ২১ জুলাই নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। এরপর পর কর্মী-সমর্থকরা আমাদের নেতার ওপর ক্ষেপে যান। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি।

সূত্র জানায়, ২০১৬ সাল থেকে বিএনপির মনোনয়ন বিক্রিতে মনোনিবেশ করেন তারেক রহমান। বিষয়টি প্রথমদিকে চাপা থাকলেও পরবর্তীতে খোলাসা হতে থাকে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তারেক রহমানের মনোনয়ন ব্যবসা প্রকাশ্যে আসে। তারপর থেকেই কর্মী-সমর্থকদের কাছে তারেক রহমান একজন রাজনৈতিক ব্যবসায়ী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে পড়েন। 

রাজনৈতিক সচেতনরা বলছেন, দীর্ঘকাল দলের শীর্ষ নেতা থেকে বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের নেতা হতে পারেননি তারেক রহমান। কারণ তিনি দেশ, জনগণ ও দলের চেয়ে নিজের জীবনকে গুরুত্ব দেন। তিনি লন্ডনে বিশাল বাড়ি নিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। আগে খালেদা জিয়া কর্মী সমর্থকদের আগলে রাখতে পেরেছিলেন। কিন্তু তারেক রহমানের উচ্ছৃঙ্খল জীবন ও সিদ্ধান্ত বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করছে। তার নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রুপিং করে দলের ক্ষতি করছেন। তারেক রহমান যেহেতু কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন সেহেতু কর্মী ও সমর্থকরা কীভাবে তার ওপর আস্থা রাখতে যাবে?

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর