রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ |  আশ্বিন ৭ ১৪৩১ |   ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ড. মঈন খানকে নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড়

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২২ ১৬ ০৪ ০১  

ড-মঈন-খানকে-নিয়ে-বিএনপিতে-তোলপাড়

ড-মঈন-খানকে-নিয়ে-বিএনপিতে-তোলপাড়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার একটি প্রস্তাব নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রস্তাবটি বিভিন্ন ফোরামে করা হলেও সর্বশেষ কূটনীতিক পাড়া থেকে একই প্রস্তাব এসেছে। এ নিয়ে বিএনপিতে চলছে তোলপাড়।

লন্ডনের কিংস্টনের একটি সূত্র জানায়, প্রস্তাবটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হয়ে লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কানে পৌঁছালে তিনি শুধু ক্ষুব্ধই হননি। বরং কিছুক্ষণ চুপ মেরে বসে থাকেন।

দলীয় গোপন সূত্র জানায়, কিছুদিন ধরেই বিএনপির কিছু নেতৃবৃন্দ কূটনীতিক পাড়ায় যোগাযোগ করছেন। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই তারা কূটনীতিক পাড়ায় দেনদরবার করছেন। এ দেনদরবারের অংশ হিসেবে বিএনপি নেতারা জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, মার্কিন দূতাবাস, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ব্রিটিশ দূতাবাসসহ বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করেছেন। কেন অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে সম্ভব নয়, সে সম্পর্কে তারা নানা রকম ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। কিন্তু এ সমস্ত আলাপচারিতায় কূটনৈতিক মহল থেকে কিছু কিছু প্রশ্ন উঠেছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে। পশ্চিমা দেশগুলো জানতে চেয়েছে, একজন দণ্ডিত পলাতক ব্যক্তি কীভাবে একটি দলের প্রধান থাকেন। যতক্ষণ পর্যন্ত তার দণ্ড এবং বিচার নিষ্পত্তি না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তার বিএনপিতে থাকা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।

সূত্র আরো জানায়, বিএনপির অতি উৎসাহী দু'একজন, যারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তারা বলেছেন, এ মুহূর্তে তারেক রহমানের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে রেখেছেন। কিন্তু তখনই মার্কিন দূতাবাসের একজন কূটনীতিক প্রশ্ন করেন 'হোয়াটস এবাউট ড. মঈন?' প্রথমে এ প্রশ্নের উত্তর দেননি বিএনপি নেতারা। দ্বিতীয় দফায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকেও একই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয় এবং তখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের একজন প্রতিনিধি বলেন‌, ‌ড. মঈন খান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলে কেমন হয়? সর্বশেষ বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল বিট্রিশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেখানেও মঈন খান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারেন কিনা- এ নিয়ে আলোচনা হয়।

অন্য একটি সূত্র দাবি করেছে, ড. মঈন খান কূটনৈতিক পাড়ায় অন্তত গ্রহণযোগ্য এবং আস্থাভাজন ব্যক্তি। কূটনৈতিকদের সঙ্গে তার ভালো যোগাযোগ রয়েছে। তার বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে কূটনীতিকরা যান। মঈন খানের প্রতি তাদের একটা আলাদা সহানুভূতি রয়েছে এবং তারা তাকে জ্ঞানী ও পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে জানেন। এজন্যই বিভিন্ন সময় তারা মঈন খানকে বলেছেন, তিনি যেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। এটি বিএনপির রাজনীতির ইতিবাচক হবে বলেও তারা মনে করেন। যদিও মঈন খান এ বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি বা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য কোনো আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু সম্প্রতি কূটনৈতিক মহল থেকে বারবার তার নাম উচ্চারিত হওয়ায় তারেকপন্থীরা বেশ দ্বিধায় রয়েছেন।

মঈন খানের ভারপ্রাপ্ত হওয়ার গুঞ্জনের সত্যতা নিশ্চিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, দলীয় প্রধান দণ্ডিত ও দলীয় ভারপ্রাপ্ত প্রধানও দণ্ডিত। দলকে সামনে থেকে পরিচালনা করতে একজন নেতা প্রয়োজন। বিদেশি কূটনৈতিকরা বিষয়টি উপলব্দি করেছেন বলে তারা পরামর্শ দিয়েছেন। তবে আমাদের মধ্যে পদবীর বিরোধ থাকায় ড. মঈনকে কেউ মানবে না।  সর্বশেষ যদি দলীয় প্রধান পরিবর্তন করে নির্বাচনে যেতেই হয় তবে তা বিবেচনা করা যেতে পারে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর