সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চলুন যাই লক্ষ্মীচরণ সাহার জমিদার বাড়ি

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৯ ০৭ ০১  

চলুন-যাই-লক্ষ্মীচরণ-সাহার-জমিদার-বাড়ি

চলুন-যাই-লক্ষ্মীচরণ-সাহার-জমিদার-বাড়ি

চট্টগ্রামের শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারী উপজেলা উত্তর ফতেয়াবাদ নন্দীরহাট এলাকায় অবস্থিত শ্রী লক্ষ্মীচরণ সাহার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ি। এই জমিদারবাড়ির নান্দনিক সৌন্দর্য ও স্থাপত্যশৈলী আপনার কাছে হতে পারে এক অন্যতম দর্শনীয় স্থান। তো আর দেরি কেন? চলুন না ঘুরে আসি লক্ষ্মীচরণ সাহার জমিদার বাড়িতে থেকে।

১৮৯০ সালের দিকে এই ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি  জমিদার পরিবারে বিও বৈভর প্রদর্শনের জন্য তৈরি করা হয়। জমিদার শ্রী লক্ষ্মীচরণ সাহার বাড়িটি তৈরি করেছেন। ১৯২০ সালের জমিদার লক্ষ্মীচরণ সাহা, মাদল সাহা ও নিশিকান্ত সাহা এই তিন ভাই মিলে জমিদারী সূচনা করে গেছে। তাদের সন্তানের সংখ্যার মোট বার জন ছিলো। ১৯৫০ সালের  জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করা হয়। জমিদার লক্ষ্মীচরণ সাহার বড় ছেলে প্রসন্ন সাহার হাতেই জমিদারি সমাপ্ত হয়।

প্রায় পাঁচ একর জায়গারজুড়ে  দোতলা এই জমিদার বাড়িটি। জমিদার বাড়িটি বাইরের অংশ অবিকল আগের মতো রয়েছে। বাড়িটিতে নানা কারুকাজ করা দেয়াল ও কার্নিশগুলোতে চমৎকার সুনিপুণ দৃষ্টিনন্দন করা কাজ। বড় আকৃতির শয়ন কক্ষ, গুদাম ঘর, ধানের গোলা, রান্না ঘর, সেস্তা ঘর, বাড়ির মধ্যখানে কারুকাজ বড় মন্দির, বড় বড় তিনটি পুকুর বাড়ি সমানে আর পিছনে ঘাট বাঁধানো, গোয়াল ঘর, ঘোড়া রাখার ঘরসহ সবকিছু আছে। পুরো বাড়িটির কোথাও কোনো রডের গাঁথুনি নেই, শুধু লাল ইট আর চুনা মাটি দিয়ে তৈরি করা এই বাড়ি। পুরো বাড়ির দুই পাশে উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দুটি গম্বুজ যা জমিদার বাড়ির গর্বের প্রতীক হয়ে আছে এখনো।

জানা যায়, হাটহাজারী, নাজিরহাট, ধলই, গুমারমর্দন, জোবরা, আলীপুর, ফতেয়াবাদসহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছিল এই জমিদারি। এই অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার কৃষক প্রতিবছর রাজ পুণ্যাহ অনুষ্ঠান করত। জমিদার প্রসন্ন সাহার ছিলে দুটি ঘোড়ার গাড়ি। তিনি ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে আদালত ভবনে যেতেন। আর দুই নেপালি দাওয়ান ছিল যারা সব সময় সঙ্গে থাকতেন। চাকর বাকর ছিল অর্ধশতাধিক, নয় জোড়া হালের গরু আর গোলা ভরা ধান, বাড়ি সামনে আর পিছনে ঘাট বাঁধানো তিনটি বড় পুকুর ভরা ছিল মাছ। আর একবেলায় রান্না হতো প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ জনের জন্য। কিন্তু এসব আজ রূপকথার গল্প মনে হবে। এক সময় বিত্ত বৈভবের অভাব না থাকলেও এখন আর কিছু নেই।

যেভাবে যাবেন

চট্টগ্রামে আসার জন্য ঢাকা থেকে বিভিন্ন এসি বা ননএসি বাস আছে। শহর থেকে ভাড়া নিবে ১৫ টাকা। আর চাইলে আপনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন করে যেতে পারবেন। প্রথমে আপনাকে দামপাড়া বাস কাউন্টার থেকে সিএনজি বা বাসে করে ষোলশহর জংশনে যেতে হবে সেখান থেকে ফতেয়াবাদ জংশনে নামতে হবে আর ফতেয়াবাদ জংশন থেকে একটু দূরে জমিদার বাড়িটি।

খরচ

ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে সব মিলে দুই হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে আপনি ঘুরে আসতে পারবেন চাইলে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর