সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১ |   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঈদে মুখর ধরলা নদীর পাড় ও নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি

প্রকাশিত: ৩ মে ২০২২ ২৩ ১১ ০১  

ঈদে-মুখর-ধরলা-নদীর-পাড়-ও-নাওডাঙ্গা-জমিদার-বাড়ি

ঈদে-মুখর-ধরলা-নদীর-পাড়-ও-নাওডাঙ্গা-জমিদার-বাড়ি

কুড়িগ্রামে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখরিত হয়েছে ধরলা নদীর পাড় ও ফুলবাড়ির নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি। ঈদের নামাজ শেষে এই দুই এলাকা ভ্রমণ পিয়াসু মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে পড়ে।

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই দুই এলাকায় ভ্রমণ পিয়াসুরা মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইক নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছে। 

বিপুল মানুষের উপস্থিতি ঘটেছে জেলার ফুলবাড়ী ও লালমনিরহাটহাটের কুলাঘাট সংলগ্ন ধরলা নদীর পাড়ে। দর্শনার্থীদের আগমনে এখানে রাস্তার দুধারে বসেছে খাবারের দোকানসহ রকমারি জিনিসের পসরা। ভ্রমণ পিয়াসু মানুষেরা এসব দোকান থেকে কিনেছেন নানা জিনিস।

ধরলা নদীর ওপর নির্মিত ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ফুলবাড়ী সেতু বা শেখ হাসিনা দ্বিতীয় ধরলা সেতুটি ভ্রমণ পিয়াসু মানুষের নজর কাড়ে। এ সেতুটি ও সেতুর পশ্চিম পাড়ের ধরলা নদীর মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য শতশত মানুষের ভিড় পড়ে জমে।

ধরলা নদীর পাড়। ছবি: দৈনিক প্রভাতী

ধরলায় ১০ টাকার বিনিময়ে নৌকা ভ্রমণের সুযোগ থাকায় শিশু-কিশোরসহ ভ্রমণ পিয়াসু মানুষেরা ছুটে আসছেন। প্রতি বছর ঈদের পর দুই থেকে তিনদিন এখানে ভ্রমণ পিয়াসু মানুষের ভিড় থাকবে বলে জানান ধরলা নদী পাড়ের স্থানীয় নৌকার মাঝিরা।

স্থানীয় নৌকার মাঝিরা জানান, ধরলা নদীর উপরে সেতু হওয়ায় আমাদের নৌকা চলাচলে ভাটা পড়ে। তবে প্রতি রমজানের ঈদে ও কোরবানির ঈদে ধরলা নদীর পাড়ে ভ্রমণ পিয়াসু মানুষের উপস্থিতি ঘটায় বছরের এই দুই সময়ের আমাদের নৌকা চলাচল শুরু হয়।

ভ্রমণে আসা লালমনিরহাটের ফকিরে তকায়া এলাকার আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমি ঈদ উপলক্ষে আমার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ফুলবাড়ী সেতু বা শেখ হাসিনা দ্বিতীয় ধরলা সেতুটি দেখতে এসেছি। 

তিনি আরো জানান, এখানে এসে ১০ টাকার বিনিময়ে ধরলা নদী ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে আনন্দ উপভোগ করেছি। ছেলে-মেয়েরাও আনন্দ পেয়েছে।

শেখ হাসিনা দ্বিতীয় ধরলা সেতু।

স্থানীয় ইউসুফ আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে মানুষ করোনার কারণে বেড়ানোর সুযোগ না পাওয়ায় এবার ঈদে ভ্রমণে এসেছি। এটা মানুষের জীবনের একটি বড় খোঁড়াক। আর এখানে ভ্রমণ স্থান না থাকায় ধরলা নদীর পাড় ও ফুলবাড়ির নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি ভ্রমণে ছুটছেন সবাই।

লালমনিরহাটের ফুলগাছ থেকে ভ্রমণে আসা নুরবানু আক্তার জানান, ঈদের আনন্দে ধরলা নদী পাড়ের মুগ্ধকর দৃশ্য আমাকে আনন্দিত করেছে। এখানে এসে নৌকা ভ্রমণ করার সুযোগ অনেক সুন্দর লেগেছে।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর নেওয়াশী এলাকা থেকে ভ্রমণে আসা ওহাব আলী জানান, আমি বন্ধুদের সঙ্গে ধরলা পাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি। এখানকার প্রকৃতির দৃশ্য আমাদের মুগ্ধ করেছে।

কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসিয়াত জানান, ঈদে আমাদের বেড়ানো হয় না। এবার প্রথমবারের মতো ঈদে ধরলা নদীর পাড় ও ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি ভ্রমণ করেছি। এই দুই জায়গা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

বিলুপ্তপ্রায় ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

গৃহবধূ মোস্তারি জানান, ঈদের আনন্দের ধরলা নদীর পাড় ও ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি ভ্রমণের আনন্দ আমার পরিবারের সদস্যদের মুগ্ধ করেছে। এই দুই স্থান ভ্রমণের সুযোগ আমরা ভীষণ উপভোগ করেছি। এ দুটি স্থান পর্যটন এলাকা করলে ভালো হবে।

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট এলাকায় বড় ধরণের কোনো পর্যটন এলাকা গড়ে না ওঠায় পাশাপাশি থাকা এই দুই জেলার ভ্রমণ পিয়াসু মানুষেরা তাদের মনের খোঁড়াক ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। ফলে ঈদসহ বছরের বিশেষ দিনগুলোতে এ দুজেলার মানুষেরা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ও লালমনিরহাটের কুলাঘাট সংলগ্ন ধরলা নদীর ওপর নির্মিত ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ফুলবাড়ী সেতু বা শেখ হাসিনা দ্বিতীয় ধরলা সেতুটি ভ্রমণ করেন। 

পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়িটির ভগ্নদশার দৃশ্যপট দেখে মনে কাঙ্ক্ষিত ভ্রমণের পিপাসা মেটানোর চেষ্টা করেন। এ কারণে বছরের বিশেষ দিনগুলোতে দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখরিত হয় ধরলা নদীর পাড় ও ফুলবাড়ির নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর