রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১ |   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না ভবনে: ডিএসসিসির তদন্ত দল

প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২ ১২ ৩২  

পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ভবন হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনে কোনো অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল। ভবনে ছিল প্রচুর কেমিক্যাল। ঘটনা তদন্তে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর এ তথ্য জানিয়েছে।শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনসহ আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো পরিদর্শন করে ১১ সদস্যের তদন্ত দল। পরে এক ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়।

 ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল এসএম জুলফিকার রহমান বলেন, এই ভবনে আগুন নেভানোর জন্য কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। প্রচুর কেমিক্যাল ছিল, যে কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ওয়াহেদ ম্যানশন পরিদর্শন শেষে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জানিয়েছিলেন- এই ভবনে কেমিক্যালের কোনো গোডাউন ছিল না। মন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ডিএসসিসির তদন্ত দলের প্রধান বলেন, ওয়াহেদ ম্যানশনে অবশ্যই কেমিক্যাল ছিল। এখানকার যে পাউডার, সেগুলো কেমিক্যাল। এখানে যেসব প্লাস্টিকের বোতল পাওয়া গেছে, সেগুলোও কেমিক্যাল মাখানো।

এর আগে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ডিএসসিসি গঠিত ১১ সদস্যের তদন্ত দল চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ঘটনাস্থলে যায়। ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন প্রফেসর ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী (পুরকৌশল বিভাগ-বুয়েট), প্রফেসর ড. ইশতিয়াক আহমেদ (পুরকৌশল বিভাগ-বুয়েট), লে. কর্নেল এসএম জুলফিকার রহমান (পরিচালক-ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স), মো. আসাদুজ্জামান (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী-ডিএসসিসি), মো. জাফর আহম্মেদ (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী-ডিএসসিসি), মো. সিরাজুল ইসলাম (প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ-ডিএসসিসি), মো. নুরুল ইসলাম (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-রাজউক), মো. শাহ আলম (পরিচালক-রাজউক) ও সদস্য সচিব মুন্সী মো. আবুল হাসেম (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-ডিএসসিসি)।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটির সদস্যদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদ্ঘাটনসহ দুর্ঘটনার সার্বিক বিষয় সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবে এ কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অগ্নি অনুবিভাগ) প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী এ কমিটির নেতৃত্ব দেবেন।

কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহম্মেদ খান, ঢাকা জেলার একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের লালবাগ জোনের উপপুলিশ কমিশনার।

কমিটিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের উৎস, কারণ ইত্যাদি সার্বিক বিষয় সরেজমিন তদন্তপূর্বক সাত দিনের মধ্যে মতামত ও সুপারিশ প্রদান করার জন্য বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবনে বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুনের ভয়াবহতা কিছুটা কমলেও আবারও বেড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট একযোগে কাজ করে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। উদ্ধার অভিযান চলে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এ ঘটনায় অন্তত ৬৭ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন ৪১ জন।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী