বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ থেকে বছরে রাজস্ব আসবে ৪০০ কোটি টাকা
দৈনিক প্রভাতী
প্রকাশিত : ১০:১৬ পিএম, ২ মার্চ ২০১৯ শনিবার
২০১৮ সালের ১১ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে রচিত হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১। তীব্র আগুনের হলকা ছুটিয়ে প্রচণ্ড শক্তিতে মহাকাশের পথে ডানা মেলে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। ১১ মে মধ্য রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এর মাধ্যমে ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইটের অভিজাত ক্লাবে যুক্ত হয় বাংলাদেশের নাম। বাস্তব রূপ পেল দীর্ঘদিনের এক স্বপ্ন। মহাকাশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট থাকবে, এটা আগে ছিল স্বপ্নের মতো। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ স্যাটেলাইটের অভিজাত ক্লাবে যুক্ত হয়। আর এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বছরে ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আসবে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিদেশি স্যাটেলাইটকে আনুমানিক যে ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ভাড়া দেয়, সেটা সাশ্রয় হবে বলেও তিনি জানান।
জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী এই কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল তাদের সম্প্রচার কাজ সম্পন্ন করতে পারছে। ইতোমধ্যে ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম) সার্ভিসের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি চ্যানেল অনুষ্ঠান সস্প্রচার করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি টিভি চ্যানেল (বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড, সংসদ টিভি, বিটিভি চট্টগ্রাম) সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। বেসরকারী চারটি টিভি চ্যানেল (একাত্তর টিভি, সময় টিভি, বৈশাখী টিভি ও এনটিভি) সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ ও মৎস্য আহরণকারী জাহাজগুলোর নিরাপদ চলাচল ও গতিপথ নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম গ্রহণের কাজ চলমান। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে ই-লার্নিং, টেলিমেডিসিন, ই-কৃষির মতো নতুন নতুন সেবার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আপদকালীন সময় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন টেলিকমনিকেশন সেবা দেওয়া যাবে। দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা সম্প্রসারণ করা যাবে। যেমন- চিকিৎসাসেবায় স্যাটেলাইট ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। ইতোমধ্যে আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রাপ্তির সুবিধা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে শুধু দেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোই বছরে আনুমানিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভাড়া দিয়ে আসছে।
এছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠানও বিদেশি স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটি-১ ব্যবহারের মাধ্যমে উল্লিখিত খাতে ব্যয় করা বিরাট অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে সর্বমোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। বিশ্ব বাজারে ট্রান্সপন্ডারের মূল্য সময়ের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সব ট্রান্সপন্ডার থেকে বছরে ৪০ মিলিয়ন থেকে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৩শ ৫০ থেকে ৪শ কোটি টাকা।