জন্মাবে "মানব সন্তান` মঙ্গল গ্রহের বুকে
দৈনিক প্রভাতী
প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার
উনবিংশ শতাব্দী থেকে বিজ্ঞানীরা মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সন্ধান শুরু করেছেন। তবে অধুনা বিজ্ঞানীরা আধুনিক বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মঙ্গলের মাটি, পাথর, গ্রহের পরিবেশে বিদ্যমান গ্যাসের গঠনশৈলী ইত্যাদিকে কাজে লাগিয়ে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজছেন। বিজ্ঞানীরা তাদের ক্রমবর্ধমান গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছেন, যে প্রাচীন কালে এই গ্রহে পানির উপস্থিতি ছিল। তবে এবার বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করছেন লাল গ্রহ হিসেবে খ্যাত মঙ্গলের বুকে মানব সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা কতটুকু। মঙ্গলের বুকে মানুষের উপযোগী বসতি গড়ে তোলা কিংবা সেখানে থাকা অবস্থায় প্রথম মানব সন্তান জন্মদান আদৌ সম্ভব কিনা সেসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সেখানে যদি মানুষের বেঁচে থাকার মতো পরিবেশ তৈরি করা যায় তাহলে সেখানে কম মাত্রার মাধ্যাকর্ষণের জন্য নারী-পুরুষের মিলিত হওয়াটা এক ধরনের সমস্যা। এছাড়া নিষেক প্রক্রিয়া, দশ মাস ধরে গর্ভে সন্তান ধারণ করা এবং সন্তানকে দুগ্ধ পান করানো সবকিছুর জন্যই মানুষকে একটি জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
মহাশূন্য মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ক্রিস লেনহার্ডটের মতে, মহাশূন্যসহ মহাকাশযানে ইঁদুর, ব্যাঙ, মাছ এবং উদ্ভিদের প্রজনন নিয়ে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। সেখানে কিছু ক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গেছে আবার কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।
পৃথিবীর সাথে মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণের তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মঙ্গলে মানুষের প্রজননের বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর তুলনায় মহাকাশের শূন্য মাধ্যাকর্ষণ কিংবা মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ বলের অবস্থার আলোকে সেখানে স্তন্যপায়ীদের প্রজননক্ষমতা নিয়ে জানার চেষ্টা করছেন তারা। বিজ্ঞানীদের মতে, মঙ্গলে পৃথিবীর তুলনায় মাত্র শতকরা ৩৮ ভাগ মাধ্যাকর্ষণ বল কাজ করবে। সুতরাং সেখানে নারী-পুরুষের মিলিত হওয়ার ফলাফল খুব একটা কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে তাদের।
পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গলের বুকে উচ্চ বিকিরণের মুখোমুখি হতে হবে মানুষকে। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রও মানুষের প্রজননের জন্য বেশ উপযোগী। কিন্তু মঙ্গলের উচ্চ বিকিরণ এবং ভিন্ন প্রকৃতির চৌম্বক ক্ষেত্রে কারণে সেখানে যৌন মিলনের ফলে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা ক্ষীণ হবে বলেই তাদের অনুমান।