করে দেখিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশিত : ০৫:৩০ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২২ রোববার
করে-দেখিয়েছেন-যুব-ও-ক্রীড়া-প্রতিমন্ত্রী
সম্প্রতি বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন বিজয়ী দল দেশে ফিরে তার হাত ধরেই পেয়েছে রাজকীয় সংবর্ধনা। ছাদ খোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে পেয়েছে সারা শহর ঘুরার সুযোগ। আর এই কাজটাই করে দেখিয়েছেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক তরুণ এই মন্ত্রী। ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়নদের সংবর্ধনা জানিয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন তিনি।
১৯ সেপ্টেম্বর নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মত সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ১৯ বছর পর ফের বাংলাদেশকে সাফ শিরোপার স্বাদ দিল মেয়েরা।
এর আগে ২০০৩ সালে ঢাকায় আয়োজিতে সাফের ৫ম আসর সাফ গোল্ড কাপের ফাইনালে রোমাঞ্চকর ম্যাচে টাইব্রেকারে ৫-৩ এ শক্তিশালী মালদ্বীপকে হারিয়ে প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
নেপালের বিপক্ষে ফাইনালের আগে বাংলাদেশ দলের রাইট উইঙ্গার সানজিদা আক্তার আক্ষেপ করে ফেসবুকে বলেছিলেন ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে। তারা জিততে চান শুধু। তবে তার এই আক্ষেপ পূরণ করে দেখালেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
সানজিদার ভাইরাল হওয়া এই স্ট্যাটাসটি নজরে আসে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সিদ্ধান্ত নেন। মেয়েরা বাংলাদেশকে এত বড় সম্মাননা দিল। তাদের যদি সম্মানিত না করা যায় সেটা অন্যায় হবে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের উদ্যোগেই বাসে ব্যবস্থা করেন তিনি।
এ বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন,আমাদের প্রমীলা দল আমাদের জন্য যে ফলাফল ও সাফল্য বয়ে এনেছে তা অবিস্মরণীয়। এটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ এক গর্বের দিন। তারা বাংলাদেশকে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব এনে দিয়েছে। আমাদের ফুটবলার সানজিদা আক্ষেপ করে বলেছিল যে হয়তো তাদের ছাদখোলা কোনো বাসে সংবর্ধনা দেয়া হবে না; কিন্তু তারপরও তারা দেশের জন্য শিরোপা জিততে চায়। তার এ আক্ষেপকে আমরা ঘোচানোর চেষ্টা করছি।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেছিলেন, আমরা একটি ছাদখোলা বাসের ব্যবস্থা করে ফেলবো। এয়ারপোর্টে সংবর্ধনা দিয়ে ছাদখোলা বাসে করে আমরা তাদেরকে বাফুফে ভবনে নিয়ে যাবো। তারপরের ঘটনা গোটা দেশবাসী দেখেছে। পুরো দেশের মানুষ সাফজয়ী মেয়েদের বরণ করে নিয়েছে। রাজধানীর লাখ লাখ মানুষ তাদের বরণ করতে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। সৃষ্টি হয়েছিল অন্য রকম একটি ইতিহাস।
ছাদ খোলা বাসেই মেয়েদের সঙ্গে ৪-৫ ঘন্টা শহর ভ্রমণ করে বাফুফে ভবনে এসেছিলেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের এ অভিভাবক। চেহারায় ছিল না একটু ক্লান্তি। প্রকাশ পাচ্ছিল উচ্ছাস। দেশের প্রথম কোন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে এত কাছ থেকে পেয়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়ারাও সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, খেলা নিয়ে মানুষ এত ভালোবাসা দেখাতে পারে, সেটা আমার জীবনেও দেখিনি। আপনারা জানেন সানজিদা একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল, সেখানে ছাদ খোলা বাসের আক্ষেপ করেছিল সে। আমরা এক রাতের মধ্যে সেই ছাদখোলা বাস ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরো বলেন, মেয়েদের কারণেই দেশের সব মানুষ উৎসবে শরীক হয়েছে। আশা করি, মেয়েরা আগামীতে আরো ভালো সাফল্য নিয়ে আসবে। বয়সভিত্তিক দলের পর এবার জাতীয় দলও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
মেয়দের পুরস্কার দেয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী করোনার মধ্যে বয়সভিত্তিক দলকে বাসায় ডেকে নিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন। আর্থিক পুরস্কার দিয়েছিলেন। আমি ছাদখোলা বাসে থেকে তাকে যে কয়বার ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েছি, প্রত্যেকবারই উত্তর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে আসলে তাঁর সঙ্গে কথা বলে মেয়েদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করবো। আমরা মেয়েদের জন্য বড় কিছু দেওয়ার অপেক্ষায় আছি।
ছেলেরা যখন দিনকে দিন নিচের দিকে যাচ্ছে সেখানে মেয়েরা বাংলাদেশের পতাকাকে বিশ্ব দরবারে উঁচু করে ধরছে। মেয়েদের দিকেই তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ। একদিন এই মেয়েরাই বিশ্ব জয় করবে এমনটাই প্রত্যাশা যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর।