মেহমানখানায় ছিন্নমূলদের ফ্রি খাবার
প্রকাশিত : ০৩:১৫ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২২ রোববার
মেহমানখানায়-ছিন্নমূলদের-ফ্রি-খাবার
ময়মনসিংহের নান্দাইলে ইকবাল হোটেল ও রেস্টুরেন্টের মেহমান খানায় প্রতি শুক্রবার নিয়মিত দুপুরের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করেছেন কনক আহমদ নামে এক মানবিক মানুষ। মল্লিকা রাশিদাদের মতো দেড় শতাধিক ছিন্নমূল, এতিম, ভিক্ষুক, হতদরিদ্রের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা আছে সেখানে ।
ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ হাইওয়ে সড়কের নান্দাইল সদর বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশে অবস্থিত এই হোটেলের মেহমান খানায় গত একবছর ধরে প্রতি শুক্রবার দেড়শো মানুষ নিয়মিত ফ্রি খাবার খেয়ে থাকেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মূর্তুজ আলী ফকির বলেন, নান্দাইল সদরের বাসিন্দা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. সালাম ভূঁইয়া বীর প্রতীকের এক মাত্র ছেলে কনক আহমদ।করোনাকালীন সময়ে তার বাবা বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে কনক বাসস্ট্যান্ডের ইকবাল ফকিরের হোটেলে মেহমানখানা খোলে অসহায় দরিদ্র শ্রেণির মানুষদের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করে আসছেন।
খাবার খেতে আসা রাহিমা বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রতি শুক্রবার এই হোটেলের মেহমান খানায় দুপুরের ভাত খাই। এতে আমাদের প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। একেক দিন একেক আইটেমের তরকারি রান্না করা হয় আমাদের জন্য। কোনোদিন ডিম, কোনদিন মুরগির গোশত, কোনদিন গরুর গোশত বা মাছ, সঙ্গে ডাল ও সবজির ব্যবস্থা থাকে।
খাবার খেতে আসা রুমেলা বলেন, বাবা আমরা যারা এখানে খেতে আসি সবাই ভিক্ষুক। ঈদ পর্ব ছাড়া একটু গোশত বা ভালো মাছ খাওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। এই মেহমান খানায় প্রতি শুক্রবার দুপুরের খাবারের সময় একটু ভালো তরকারি দিয়ে খেতে পারি। তিনি বলেন, যারা আমাদের এই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই আমাদের।
হোটেল মালিক ইকবাল ফকির বলেন, বছর ধরে আমার হোটেলে মেহমান খানা খোলে কনক আহমদ প্রতি শুক্রবার হতদরিদ্র মানুষদের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। প্রতি শুক্রবার দেড় থেকে দুশ মানুষ ফ্রি খাবার খেয়ে যায়। কনক আহমদ হোটেলের সঙ্গেই নিজ বাড়িতে থাকেন। সেখান থেকে মেহমান খানা লেখা স্লিপ নিয়ে আসেন খাবার খেতে আসা মানুষজন। আমার কাছে স্লিপ জমা দিয়ে খেয়ে চলে যান তারা। পরবর্তীতে সব স্লিপ জমা দিলে কনক আহমদ বিল পরিশোধ করে দেন। প্রতি মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করেন তিনি।
মানবাধিকার সংগঠক এনামুল হক বাবুল বলেন, এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। যে সমস্ত ছিন্নমূল মানুষ ভালো কিছু তরকারি দিয়ে দু’মুঠো ভাত খেতে পারেন না। তাদেরকে বিনা টাকায় এই সুযোগ করে দিয়ে তিনি অনেক বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন। সমাজের বিত্তবানদের উচিত এধরনের কাজে এগিয়ে আসা।