প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেল সড়কে প্রাণ হারানো সেই ৮ ভাইয়ের পরিবার
প্রকাশিত : ০৯:১৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২২ বুধবার
প্রধানমন্ত্রীর-উপহার-পেল-সড়কে-প্রাণ-হারানো-সেই-৮-ভাইয়ের-পরিবার
এর আগে গত ২১ জুলাই এই আট পরিবারের হাতে জমির দলিল, খতিয়ান হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত উজ্জ জামান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইদুল ইসলাম, উপজেলা টেকনিশিয়ান এরশাদুল হক, স্থানীয় মেম্বারসহ সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ের পূর্বে পাশে মনোরম পরিবেশে দুই সারিতে সেমিপাকা ৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে দুটি রুম, একটি রান্না ঘর, একটি বাথরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল এবং বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ওইসব পরিবার তাদের সংসারের ব্যবহার সামগ্রী সাজাতে শুরু করেছেন। কয়েকদিনের মধ্যে তারা পুরোপুরিভাবে বসবাস শুরু করবেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট নার্সারি এলাকায় মৃত পিতা সুরেশ চন্দ্র সুশীলের শ্রাদ্ধনুষ্টান পূর্বে ক্ষুদান্ন দান করে বাড়ি ফেরার জন্য সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এ সময় কক্সবাজারমুখী একটি পিকআপ তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ছয় ভাই- অনুপম সুশীল, নিরুপম সুশীল, দীপক সুশীল, স্মরণ সুশীল, চম্পক সুশীল ও রক্তিম সুশীল। এতে গুরুতর আহত হন নিহতদের ছোট ভাই-বোন সাকী সুশীল এবং প্লাবন সুশীল। পরে এই পরিবারের সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগদ অর্থ এবং প্রতিটি নিহত ও আহত পরিবারের জন্য একটি করে ঘর উপহার হিসেবে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
সরকারের পক্ষ থেকে ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে প্লাবন সুশীল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে প্রতিটি মানুষ যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের ঋণ কখনও শোধ করতে পারবো না। আমরা এতোদিন সরকারি জায়গার ওপর বসবাস করে আসছিলাম। আমাদের একটা স্থায়ী ঠিকানা হলো।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আমরা মাথাগোঁজার ঠাঁই পেয়েছি। তিনি আর্থিক থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।
চকরিয়ার ইউএনও জেপি দেওয়ান বলেন, ওই পরিবারের ওপর বড় ধরনের একটা ট্রাজেডি ঘটে গেছে। তাদের পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা আমাদের পক্ষ সম্ভব না। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়েছেন। তাদের প্রতিটি পরিবারকে মুবিজবর্ষের ঘর হস্তান্তরের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ।
এই প্রকল্পের আওতায় ডুলাহাজারায় সড়কে প্রাণ হারানো সেই আট পরিবার অর্থাৎ মা মৃণালীনি সুশীল, পপি সুশীল, গীতা সুশীল, সাকী সুশীল, তৃষ্ণা সুশীল, দেবিকা সুশীল, পূজা সুশীল ও শান্তা সুশীলকে এরআগে ঘরের চাবি, জমির দলিল এবং খতিয়ান হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১২ অক্টোবর তাদের নবনির্মিত ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেপি দেওয়ান আরো বলেন, ডুলাহাজারায় সড়কে প্রাণ হারানো সেই পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং সর্বস্তরের মানুষ সবসময় তাদের পাশে ছিলো। ভবিষ্যতেও এই পরিবারের পাশে থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেন ইউএনও।