২৭ দিন পর হাসপাতাল ছাড়লেন গৃহবধূ
প্রকাশিত : ০৮:১৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২২ বুধবার
২৭-দিন-পর-হাসপাতাল-ছাড়লেন-গৃহবধূ
বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরেন তিনি।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্বামী আশিকসহ শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ গৃহবধূ সুমাইয়াকে বেদম মারধর করে। এ ঘটনায় ঐ দিন হাসপাতালে ভর্তি হন সুমাইয়া। তবে সুমাইয়াকে নির্যাতনের মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়েছেন বলে জানান সুমাইয়ার বড় ভাই কাজী রমজান।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১১ মাস আগে নড়াইল সদরের পলইডাঙ্গা গ্রামের মনসুর খানের ছেলে আশিক খানের সঙ্গে লোহাগড়া উপজেলার শামুকখোলা গ্রামের নজরুল ইসলাম বাদশার মেয়ে কাজী সুমাইয়া ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুমাইয়া জানতে পারেন তার স্বামী মাদকাসক্ত। সংসারে সুখের কথা বিবেচনায় স্বামীর মাদকাসক্তের বিষয়টি গোপন রাখলেও পরে তা জানাজানি হয়ে যায়। স্বামীকে মাদক থেকে দূরে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন সুমাইয়া। এ কারণে প্রায়ই সুমাইয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হতো। এরই জেরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে আশিক তার স্ত্রীকে কিল-ঘুষি ছাড়াও রড দিয়ে বেদম মারধর করে পালিয়ে যায়।
গৃহবধূ সুমাইয়া বাবা নজরুল ইসলাম বাদশা বলেন, বিয়ের দুই মাস পর থেকেই আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু হয়েছে। জামাই আশিক প্রায়ই সুমাইয়াকে মারধর করে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে সালিশও হয়েছে। তারপরও আশিকের নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর আমার মেয়েকে রড দিয়ে বেদম মারধর করে আশিক। এতে তার তিনটি দাঁত ভেঙে গেছে। ঠোঁটে ১০টি সেলাই দিতে হয়েছে। মাথা, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুমাইয়ার স্বামী আশিক নড়াইলে নির্মাণাধীন রেলওয়ে প্রকল্পে চীনাদের সঙ্গে দোভাষী হিসেবে কাজ করত।
সুমাইয়ার বড় ভাই কাজী রমজান বলেন, আমার বোনকে নির্যাতনের ঘটনায় আশিকসহ তার বাবা-মা ও বোনের নামে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে সদর থানায় মামলা হয়েছে। এরপর আসামিরা গত ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হলে মূল অভিযুক্ত আশিককে বিজ্ঞ বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলেও অন্যরা জামিন পান। আদালত থেকে বের হয়ে ঐ দিনই (১৮ সেপ্টেম্বর) আশিকের বাবা মনসুর খান আমার বাবাকে (কাজী নজরুল ইসলাম) মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ সারথি রায় জানান, সুমাইয়ার মাথা, ঠোঁটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে অনেকদিন চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মূল অভিযুক্ত আশিক খান কারাগারে।