মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উন্মোচিত হলো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভাগ্যের দ্বার

প্রকাশিত : ০৬:১৫ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২২ সোমবার

উন্মোচিত-হলো-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের-ভাগ্যের-দ্বার

উন্মোচিত-হলো-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের-ভাগ্যের-দ্বার

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের মধুমতি নদীর ওপর ৬ লেনের সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি সেতুটির উদ্বোধন করেন। 

দেশের প্রথম ৬লেন বিশিষ্ট এ সেতুটির উদ্বোধনের মাধ্যদিয়ে নড়াইল, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দুটি বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্বার উন্মোচিত হলো।  

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর সঞ্চালনায় এ সেতু নির্মাণ প্রকল্প বিষয়ে উপস্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী। 

এ সময় মধুমতি সেতুর পশ্চিম প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, মধুমতি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান, নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজামউৃদ্দিন খান নিলুসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।  

প্রধানমন্ত্রী সেতুটি উদ্বোধনের পর জনগণের জন্য চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় শত শত মানুষ সেতুর ওপর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করেন এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সোমবার রাত ১২টার সময় যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। 

জানাগেছে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে মধুমতি সেতু নির্মিত হয়েছে। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। 

সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে। 

তবে এতদিন কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদী ধারা বিচ্ছিন্ন ছিল। সেতু নির্মাণের ফলে সেই বিছিন্নতা নেই। কালনা সেতু চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রে নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ভারত, কোলকাতা, আসামসহ দেশের মধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর, বেনাপোল ও নোয়াপাড়া নদীবন্দরের মধ্যে যোগাযোগের মাইলফলক রচিত হবে। 

নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড (রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সেতুর উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলেন গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ। আজ তাদের স্বপ্ন পূরণ হলো। এ সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিপ্লব ঘটবে। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।