মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিলের মাঝে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা

প্রকাশিত : ০৫:১৫ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২২ সোমবার

বিলের-মাঝে-সৌন্দর্য-ছড়াচ্ছে-লাল-শাপলা

বিলের-মাঝে-সৌন্দর্য-ছড়াচ্ছে-লাল-শাপলা

সম্পর্কিত খবর লাল শাপলায় রঙিন সুতার বিল বরিশাল নগরী থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ও উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রাম। স্থানীয়ভাবে এ এলাকাটি শাপলা রাজ্য হিসাবে পরিচিত। গ্রামের নামেই বিলের নাম ‘সাতলা বিল’। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছড়ানো লাল শাপলার বিলে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে প্রতিনিয়ত।

ছুটির দিনসহ সপ্তাহের সাত দিনেই পাখিডাকা ভোর থেকে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে বিস্তৃর্ণ লাল শাপলার বিল এলাকা। পাশের সড়কে দাঁড়িয়েও যতদূর চোখ যাবে, সবুজের মাঝে রক্তিম আভা হাতছানি দিচ্ছে। বিলের কালচে পানিতে সবুজ পাতার ওপর মাথা উঁচু করে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা। এর মাঝেই দেখা মিলতে পারে সাদা আর বেগুনি রংয়ের শাপলা ফুলের। আবার তার মাঝেই সাদা বক, পানকৌড়ি, মাছরাঙ্গা, ফিঙে, শালিক, দোয়েল, চড়ই, কাঠঠোকরাসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় প্রজাতির পাখির কলকাকলিও তো আছেই। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লাল-সবুজে বির্স্তীর্ণ এ সাতলা বিলটি দূর থেকেই চোখ পড়ে পর্যটকদের। কাছে গেলে ধীরে ধীরে সবুজের পটভ‚মিতে লালের অস্তিত্ব আরো গাঢ় হয়ে খো দেয় বাহারি সৌন্দর্য। সূর্যের আভাকেও যেন হার মানিয়েছে। এ যেন প্রকৃতির বুকে আঁকা এক নকশিকাঁথা।

সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা

প্রতি বছর বর্ষার শুরুতেই ফুটতে শুরু করে শাপলা ফুল। প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানে শাপলার মৌসুম। প্রায় ১০ হাজার একর জলাভূমির মধ্যে জন্ম নেয়া লাল, নীল ও সাদা রঙের কোটি কোটি শাপলা এক নজর দেখার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বয়সের হাজারো পর্যটকদের ভিড় থাকে। পর্যটকদের আনাগোনায় দিন দিন মুখরিত হয়ে উঠছে ‘শাপলার রাজ্য’ খ্যাত সাতলা বিল এলাকা।

সাতলা বিলের লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটক আসে বহু দূর-দূরান্ত থেকে। এ বিলে ভ্রমণের জন্য রয়েছে ছোট আকারের নৌকা। সূর্যের উদয়ক্ষণে সূর্যরাশ্মি পড়া মাত্রই যেন মন পাগল করা এক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয় সাতলা বিল।

জানা যায়, শুধু সৌন্দর্যই নয়, সুস্বাদু খাবার হিসেবেও শাপলার বেশ কদর রয়েছে। ওই এলাকার গ্রামা লের সহজ সরল মানুষগুলো বিলের পানিতে জীবন সংগ্রামের আয়ের পথ হিসাবে বেছে নিয়েছেন শাপলা তোলাকে। সকালে সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে বিলে নেমে পড়ে শাপলা তোলার জন্য এ এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। পানির মধ্য থেকে শাপলাগুলো তুলে এনে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে শত শত পরিবার।

সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা

দশর্নার্থী নাজমুল হক জানান, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে তারা এতোদূর ছুটে এসেছেন। শাপলা বিলের সৌন্দর্য অবগাহনে তারা পুলকিত ও মুগ্ধ।

জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘সাতলার শাপলা বিল নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে সাতলাকে পর্যটন কেন্দ্র করার বিষয়ে পর্যটন করর্পোরেশনকে লিখিতভাবে অভিহিত করা হয়েছে। অতিসত্ত্বর সেখানে খাবার পানি ও বাথরুমের ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয়ভাবে রেস্ট হাউস করার চেষ্টা চলছে। পর্যটকরা যেন ঘুরে বিশ্রাম নিতে পারেন এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। তবে সেখানে সরকারি জমি না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। অচিরেই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে ও সকলের প্রচেষ্টায় পযর্টন কেন্দ্র গড়ে উঠবে।