ইলিশে মানা, পেট চালাতে ভিন্ন পথ
প্রকাশিত : ০৬:১৫ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০২২ রোববার
ইলিশে-মানা-পেট-চালাতে-ভিন্ন-পথ
এভাবেই নিজেদের কথা তুলে ধরলেন লক্ষ্মীপুরের মেঘনাপাড়ের জেলেরা। মা ইলিশ রক্ষায় টানা ২২ দিন নদীতে নামা নিষেধ থাকলেও এখানকার জেলেরা বেকার নেই। কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন অন্য পেশা। অনেকে আগের উপার্জিত টাকায় সংসার চালাবেন। তবে সরকারি বরাদ্দ সঠিকভাবে পেলে তাদের আর কোনো চিন্তা থাকবে না।
প্রজনন বাড়াতে প্রতি বছর অক্টোবরে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এবারো ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয় এ নিষেধাজ্ঞা। চলবে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত। টানা ২২ দিন নদী কিংবা সাগরে ইলিশ শিকারে নামতে পারবেন না জেলেরা।
ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর পাড়ের জেলেরা বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পেশা। পেট চালাতে কেউ চায়ের দোকান দিয়ে বসেছেন। আবার কেউ উপার্জন করছেন রিকশা চালিয়ে। ক্ষেত-খামারি করেও কেউ কেউ সংসারের হাল ধরেছেন। অনেকে নিজেদের জাল আর নৌকা মেরামতে সময় কাটাচ্ছেন।
জেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের মজুচৌধুরীহাট ঘাটে গিয়ে দেখা মেলে কয়েক জেলের। ঘাটে বসেই জাল বুনিয়ে আর নৌকা মেরামত করে সময় কাটাচ্ছেন তারা। একই দৃশ্য দেখা মেলে মতিরহাট, লধুয়া ঘাট, রামগতি টাংকি বাজার মাছ ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায়।
জেলেরা বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় আমরা সবসময় নিয়ম মানি। এবারো ২২ দিন নদীতে যাব না। আমরা নদীর কূলে বসে নিজেদের ছেঁড়া জাল আর ভাঙা নৌকা ঠিক করবো। এভাবে আমাদের ২২ দিন চলে যাবে।
জেলে আবুল কাশেম বলেন, নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় চাষ করে দিন কাটাচ্ছি। লাউ, লালশাকসহ শীতকালীন সবজি চাষ করে ২২ দিন কাটাবো। তাহলে নিজেকে আর বেকার মনে হবে না।
জেলে আব্দুল্যাহ বলেন, নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সংসারের খরচ চালাতে রিকশা চালানো শুরু করেছি। রিকশার আয় দিয়ে সংসার চালানো যাবে।
বসে নেই আড়তদাররাও। ঘাটে বেচাকেনা না থাকায় অন্য পেশায় পুঁজি খাটাচ্ছেন তারা। কেউ হোটেল ব্যবসা, কেউ মুদি ব্যবসা, আবার কেউ বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। তবে বরফকলের সঙ্গে জড়িতরা কিছুটা বেকার সময় কাটান। এর মধ্যে কেউ কেউ ভিন্ন পথ খুঁজছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, জেলেরা মাছ ধরতে না পারলেও বিভিন্ন আয়ের পথ রয়েছে। কিছু একটা করে তারা সংসার চালাতে পারবেন। এর মধ্যে বরাদ্দ এলে কার্ডধারী জেলেদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। জেলায় নিবন্ধিত ৫২ হাজার জেলে রয়েছেন। অনিবন্ধিত রয়েছেন আরো ২৫ হাজার।