গোপালগঞ্জে ১৫টি গণলাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু কর্নার
প্রকাশিত : ০৪:১০ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০২২ রোববার
গোপালগঞ্জে-১৫টি-গণলাইব্রেরিতে-বঙ্গবন্ধু-কর্নার
বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের প্রয়াস এটি। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রায় সব বই রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে। শিশু-কিশোরদের জন্য করা হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী ও আকর্ষণীয় কর্নার। সেখানে শিশুতোষ সব গ্রন্থের সমাবেশ ঘটানো হয়েছে। লাইব্রেরিগুলো সব বয়সী মানুষের জ্ঞান অন্বেষণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এসব গণলাইব্রেরি গড়ে তোলা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে মনোরম পরিবেশে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর আদলে লাইব্রেরি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। লাইব্রেরির সেলফে রাখা হয়েছে বই। লাইব্রেরি ও বারান্দায় বসে পাঠকরা বই পড়ছেন। সেই সঙ্গে দিচ্ছেন সৃজনশীল আড্ডা। তারা সমৃদ্ধ করছেন জ্ঞানের ভাণ্ডার।
সরকারের এডিপি ও এলিএসপি-৩ প্রকল্পের অর্থায়নে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুর রহমান ২১টি ইউনিয়নে ২১টি গণলাইব্রেরি স্থাপনের উদ্যোগ নেন। প্রথম পর্যায়ে তিনি ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ১৫টি লাইব্রেরি স্থাপন করেন। চলতি বছরের মাঝ ফেব্রুয়ারিতে এসব লাইব্রেরি পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এডিপির টাকায় লাইব্রেরির ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়।
এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের গোপালগঞ্জ জেলার ডিএফ মো রুকুনুজ্জামান বলেন, ১৪টি লাইব্রেরিতে আমরা সেলফ ও বই ক্রয়ের জন্য ২ লাখ করে ২৮ লাখ টাকা ও গোবরা ইউনিয়ন লাইব্রেরিতে ১ লাখ টাকাসহ মোট ২৯ লাখ টাকা এলজিএসপি-৩ প্রকল্প থেকে দিয়েছে। এখানে বেশ ভালো কাজ হয়েছে। সেলফ ও বই দিয়ে লাইব্রেরিগুলোকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। এখানে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও শিশু কিশোর কর্নার রাখা হয়েছে। লাইব্রেরিগুলো পাঠক টানছে। উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
লাইব্রেরি নির্মাণের উদ্যোক্তা ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুর রহমান বলেন, জ্ঞাননির্ভর জাতি গঠনের লক্ষ্যে ২১ ইউনিয়নের মধ্যে আমরা ১৫টি ইউনিয়নে গণলাইব্রেরি স্থাপন করেছি। আরো ৬টি ইউনিয়নে ৬টি লাইব্রেরি করে দেওয়া হচ্ছে। লাইব্রেরিগুলোতে সব ধরনের আকর্ষণীয় বই সরবরাহ করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে মাদক ও মোবাইল আসক্তিমুক্ত করতে চাই। এছাড়া তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এ প্রয়াস। এ প্রয়াস সফল হলে আমরা জ্ঞাননির্ভর সমাজ গঠনের পথে এগিয়ে যাব।
লাইব্রেরিতে আসা শিক্ষার্থী সিয়াম শেখ, আকতার হোসেন, হৃদয় মোল্লা বলে, লাইব্রেরির আমাদের জানার আকাঙ্ক্ষাকে প্রসারিত করেছে। এখানে এসে আমরা অবসরে বই পড়ি। বই পড়ে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারছি। বই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে পাঠ নিয়ে আড্ডা দিচ্ছি। লাইব্রেরিতে পড়াশোনার জন্য জ্ঞান অর্জন করতে পারছি।
পাঠক আতর আলী, মোমরেজ গাজী বলেন, এখানে সৃজনশীল, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বইসহ বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে। এখানে এলে প্রয়োজনীয় সব বই পাওয়া যায়। এসব বই পড়ে আমরা জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে পারছি। এতে আমরা যেমন উপকৃত হচ্ছি, তেমনি জ্ঞাননির্ভর সমাজ গঠনে এটি ভূমিকা রাখবে।
গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বই একজন মানুষকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। আলোকিত মানুষের আলো পুরো সমাজকে আলোকিত করে। এভাবেই একদিন সমাজ থেকে সমস্ত অন্ধকার দূর হয়ে যাবে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, এই লাইব্রেরি স্থাপনের প্রথম উদ্দেশ্য হলো একটি জ্ঞাননির্ভর প্রজন্ম তৈরি করা। এটি প্রতীকী হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরো বলেন, শুধু এই ১৫টি ইউনিয়ন নয়, আগামীতে জেলার সব ইউনিয়নে এ ধরনের লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে দেওয়া হবে।