প্রেমিক কলেজছাত্রকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা, ২ মাস পর লাশ উত্তোলন
প্রকাশিত : ০২:১৫ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০২২ রোববার
প্রেমিক-কলেজছাত্রকে-পরিকল্পিতভাবে-হত্যা-২-মাস-পর-লাশ-উত্তোলন
তাই এ ঘটনায় আদালতে মামলা হলে নিহত জয়ের লাশ ২ মাস ৮দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন দাস গুপ্ত ও গোসাইরহাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. ওবায়দুল হকের উপস্থিতিতে গোসাইরহাট পৌরসভার দাশেরজঙ্গল গ্রামের কবর থেকে লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
সাহরিয়ার নাজিম জয় (২০) শরীয়তপুরের গোসাইরহাট পৌরসভার দাশেরজঙ্গল গ্রামের জামাল সরদারের ছেলে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি বড়। জয় গোসাইরহাট সরকারি সামসুর রহমান কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
নিহত জয়ের বাবা জামাল সরদার জানান, আমার ছেলে সাহরিয়ার নাজিম জয়ের সঙ্গে বড় ভাই কামাল উদ্দিন সরদারের মেয়ে সানজিদা আক্তার তিশার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে আমার ভাই তিশাকে এক বছর আগে গোসাইরহাট বটনা গ্রামের বাচ্চু সরদারের ছেলে জিতু সরদারের (২৬) কাছে বিয়ে দেন। বিয়ের পর তিশা জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তাই জিতু সরদার জয়ের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। গত ১ আগস্ট দুপুরে জিতু সরদারের ভাই রাকিব সরদার (২২) মোবাইলে জয়কে বাড়ির পাশে ডেকে নেন।
পরে মোটরসাইকেল করে গোসাইরহাটের গরিবের চরে নিয়ে যান। বিকেল সাড়ে ৩টায় তিশার শ্বশুর বাচ্চু সরদার (৫৫) আমাকে ফোন দিয়ে বলে আপনার ছেলে গরিবের চর বালুরচর এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। আপনি গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। কিন্তু ছেলের শরীরে কোনো ফাটা, কাটা ছেড়া দাগ ছিল না। জিতু সরদার, কামাল উদ্দিন সরদাররা মিলে ময়নাতদন্ত না করে তড়িঘড়ি করে রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির ঘাটায় জানাজা শেষে জয়ের দাফন সম্পূর্ণ করেন।
তিনি আরো জানান, গোসাইরহাট থানায় মামলা করতে গেলে অদৃশ্য কারণে মামলা করতে ব্যর্থ হয়েছি। তাই গত ৬ সেপ্টেম্বর জিতু সরদার, রাকিব সরদার, বাচ্চু সরদার, সানজিদা আক্তার তিশা, মো. কামাল উদ্দিন সরদার, ফেরদৌসী বেগম, মাইনুল সরদারের নাম উল্লেখ করে ৫/৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করি। এর আগে গত ১১ আগস্ট আমার ছেলেকে হত্যায় যেন কোনো মামলা করতে না পারি তাই আমিসহ পরিবারের চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে আমার বড় ভাই মো. কামাল উদ্দিন সরদার গোসাইরহাট থানায় একটি ফৌজদারি মামলা করেন। যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এখন আমরা সবাই জামিনে আছি।
তিনি বলেন, আসামিরা আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে ও প্ররোচনা করে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি।
গোসাইরহাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. ওবায়দুল হক বলেন, আমরা শুনেছি জয় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। লাশ দাফনের পর আমরা জানতে পেরেছি। পরে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। পরে তারা আদালতে মামলা করেছেন। ওই সময় ময়নাতদন্ত হয়নি। তাই রোববার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন দাস গুপ্ত বলেন, ওই সময় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়েছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ময়নাতদন্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। রোববার শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম কবর থেকে লাশ তোলার নির্দেশ দেন। তাই লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি।