মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্তঃসত্ত্বাকে ভাসুরের লাথি-ঘুষি, ৩ মৃত নবজাতক প্রসব

প্রকাশিত : ০৭:১৫ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০২২ শনিবার

অন্তসত্ত্বাকে-ভাসুরের-লাথি-ঘুষি-৩-মৃত-নবজাতক-প্রসব

অন্তসত্ত্বাকে-ভাসুরের-লাথি-ঘুষি-৩-মৃত-নবজাতক-প্রসব

ভাসুরের কিল-ঘুষি, লাথিতে ছোট ভাইয়ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মৃত তিন নবজাতক প্রসবের ঘটনা ঘটেছে। কক্সবাজারের রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের রেনুর কুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী রাবিয়া বাসরী (৩০) মৃত তিন সন্তানের সঠিক বিচার চেয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। ঘটনায় জড়িত ভাসুর আবু তাহের গা ঢাকা দিয়েছেন।

নির্যাতনকারী ভাসুর আবু তাহের ওই এলাকার আব্বাস মোহাম্মদের ছেলে। নির্যাতনের শিকার নারী আবু তাহেরের ছোট ভাই প্রবাসী ছৈয়দ আলমের স্ত্রী এবং ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নাজির হোসনের কন্যা।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিকটিম রাবিয়া বাসরী জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর শাশুড়ির সঙ্গে তার তর্ক-বিতর্ক হয়, কিছুক্ষণ পর ভাসুর আবু তাহের এসে তাকে উপর্যুপরি লাথি, ঘুষি-কিল মেরে আহত করেন। ওই সময় তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঈদগড় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জাফরুল্লাহ উভয় পক্ষকে ডেকে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার কামাল উদ্দিনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিসের মাধ্যমে পারিবারিক ঘটনা হওয়ায় দুই পক্ষকে সামাজিকভাবে বসবাসের কথা বলে সুরাহা করে দেন।

এরই মধ্যে রাবিয়া বাসরী প্রসব বেদনা ও ব্যথা অনুভব করলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বজনদের সহযোগিতায় ঈদগাঁওস্থ বেসরকারি ক্লিনিক ঈদগাঁও ডায়াবেটিস কেয়ার সেন্টারে নিয়ে আসেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত তিন নবজাতক প্রসব করেন ওই নারী।

ঈদগাঁও ডায়াবেটিস কেয়ার সেন্টারের পরিচালক ডা. ইউছুপ আলী জানান, ভিকটিমের প্রসব বেদনা উঠলে হাসপাতালে আসেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত তিন নবজাতক নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বের করা হয়। নবজাতকের শরীরে আঘাতজনিত চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। ভিকটিম রাবিয়া বাসরীর পরিবার আইনগত ব্যবস্থা নিলে থানা অথবা আদালত যদি রিপোর্ট চাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রিপোর্ট পাঠাবে।

এদিকে একইসঙ্গে তিন মৃত নবজাতকের প্রসব হওয়ার ঘটনায় পুরো হাসপাতালে অপরাপর রোগী ও স্বজনদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আত্মীয় স্বজনরা ঘাতক ভাসুর আবু তাহেরের শাস্তি দাবি করেন। মারধরের মাধ্যমে তিন সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন নির্যাতনের শিকার নারী রাবিয়া বাসরী। বিদেশে অবস্থানরত স্বামীর পরামর্শক্রমে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান রাবিয়া বাসরী।

রামু থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ ধরনের খবর তিনি এখনো পাননি। তবে ভিকটিমের পরিবার আইনগতভাবে সহযোগিতা চাইলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।