সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিহত শিশুদের খেলনা আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন স্বজনরা

প্রকাশিত : ০৩:৫০ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২২ শুক্রবার

নিহত-শিশুদের-খেলনা-আঁকড়ে-ধরে-কাঁদছেন-স্বজনরা

নিহত-শিশুদের-খেলনা-আঁকড়ে-ধরে-কাঁদছেন-স্বজনরা

থাইল্যান্ডের ডে-কেয়ার সেন্টারে এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত ২৪ শিশুদের স্বজনকের মাঝে শোকের মাতম বইছে। শোকাহত স্বজনেরা নিহত শিশুদের খেলনা আঁকড়ে ধরে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন। এ হামলায় মোট ৩৮ জন নিহত হয়েছেন।

দেশটির রাজধানী ব্যাংককের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরের উথাই সাওয়ান শহরের ঐ ডে-কেয়ার সেন্টারের পাশে স্বজনদের সমবেত হতে দেখা গেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, তৃণভূমি ও ছোট ছোট পাম গাছ বেষ্টিত গোলাপী রংয়ের একতলা ভবনে গণহত্যা চালান পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা। সেই গোলাপী ভবন সমুঝ তৃণ রক্তাক্তের প্রান্তর হিসেবে রূপ নেয়। বন্দুকধারী পরে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী ও তার ছেলেকে হত্যার পর নিজের মাথায় গুলি করে জীবনের সমাপ্তি ঘটায়।

ঐ দিন হামলায় নিহত হয় তিন বছরের এক ছেলের শিশু। তার নাম টেকিন। টেকিনের খালা তার নিহত ভাগনের একটি খেলনার কুকুর ও ট্রাক্টর জড়িয়ে কাঁদছিলেন। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন, খবর পাওয়া মাত্রই তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। 

এ শিশুর বাবা ও মা ব্যাংককে চাকরি করেন। মায়ের ৪০ বছরের বোন সুভিমন সুদফানপিটক শিশুটির দেখাশোনা করতেন। তিনি বলেন, আমি ডে-কেয়ার সেন্টারে আসার পর সেখানের সামনে দুটি শিশুর মরদেহ দেখতে পেয়েছিলাম। তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম আমাদের বাচ্চা আর নেই। 

নিহতদের মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টিনা সোলা নামের এক শিশু। তার খালা ২৭ বছরের খালা নালিওয়ান ডাউগেত বলেন, দুই বছরের ক্রিস্টিনা ডায়নাসোর, ফুটবল ভালোবাসতো। তার সংক্ষিপ্ত নাম ছিল ক্যাপ্টেন। সে নতুন হেয়ারকাট করেছিল। এটিকে সে গর্বের সঙ্গে প্রদর্শন করতো। 

শুক্রবার ঐ ডে-কেয়ার সেন্টার পরিদর্শনের কথা চিল থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়োত চান ওচার। দেশটির রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ন এবং রানী সুথিদা নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ছিল।

পুলিশ বলছে, হামলাকারীকে চিহ্নিত করা গেছে। তার নাম পানয়া খ্যামরেপ। ৩৪ বছরের সাবেক এ সার্জেন্ট মাদক সেবনের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগটি প্রমাণিত হয়।

পুলিশের মুখপাত্র পায়সাল লিওসম্বন বলেন, শুক্রবার সকালে আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর ঐ ডে-কেয়ার সেন্টারে যান পানয়া। সেখান তার সন্তানকে না পেয়েই হত্যাকাণ্ড শুরু করেন। পানয়া অনবরত গুলি ও শিশুদের হত্যা করতে থাকেন। 

এদিকে, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা চক্রফাট বিচিতাবিদ বলেন, ময়নাতদন্তে শিশুদের চাকু হামলার বিষয়টি শনাক্ত হয়েছে। কোনো কোনো শিশুর শরীরে একাধিকবার চাকুর আঘাত মিলেছে। আর বয়স্কদের ওপর গুলি করা হয়েছে। 

পুলিশ এরইমধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবি করছে। পুলিশের ধারণা, পানয়া মানসিক বিপর্যস্ত থেকেই এ রকম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

ঋণ ও মাদক সেবনের বিষয়টি উল্লেখ করে বন্দুকহামলাকারী পানয়ার মা বলেন, আমি জানি না সে কেন এত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটালো। তবে সে অনেক চাপের মধ্যে ছিল।