সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মায়ের ফ্ল্যাট পরিষ্কার করতে গিয়ে মিললো লটারি টিকেট, লাখ টাকা পেল মেয়ে

প্রকাশিত : ০২:৫০ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২২ শুক্রবার

মায়ের-ফ্ল্যাট-পরিষ্কার-করতে-গিয়ে-মিললো-লটারি-টিকেট-লাখ-টাকা-পেল-মেয়ে

মায়ের-ফ্ল্যাট-পরিষ্কার-করতে-গিয়ে-মিললো-লটারি-টিকেট-লাখ-টাকা-পেল-মেয়ে

মায়ের মতো লটারির নেশা নেই তার। তবে মা বেঁচে থাকতে প্রতি সপ্তাহে তার জন্য লটারির টিকেট কিনতেন মধ্য চল্লিশের কেলি ফার্থ। যদিও কেলির মায়ের ভাগ্যে কখনও লটারির শিকে ছেঁড়েনি। সেই মায়ের ফ্ল্যাট পরিষ্কার করতে গিয়েই লক্ষাধিক টাকার লটারি জিতলেন কেলি।

গত বছরের মে মাসে মাকে হারিয়েছেন ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট হ্যালিফ্যাক্স এলাকার বাসিন্দা কেলি। সম্প্রতি মায়ের ফ্ল্যাটে গিয়ে ঝাড়া-মোছা করছিলেন তিনি। সেটি গোছগাছ করতে গিয়ে হাতে এসেছিল একটি কার্ড।

ওই কার্ডে পাঁচটি নম্বর লিখে রেখেছিলেন কেলির মা ক্যারল। যা দেখে পুরনো কথা মনে পড়ে গিয়েছিল কেলির। প্রতি সপ্তাহে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির কাছের দোকানে ছুটতেন তিনি। ৬৫ বছরের বৃদ্ধার জন্য কিনতে লোটো হটপিকস লটারির টিকেট।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে কেলি জানিয়েছেন, ওই কার্ডে লেখা ছিল ৭, ১৭ এবং ৩৭— এই নম্বরগুলি। প্রতি বার লটারির মেশিনে এই নম্বর নিয়ে খেলতেন তার মা।

মায়ের স্মৃতিতেই ওই নম্বর দিয়ে লটারিতে ভাগ্যপরীক্ষা করা স্থির করেন কেলি। ওয়েস্ট হ্যালিফ্যাক্সের যে দোকান থেকে মায়ের জন্য লটারি কিনতেন, সেখানেই বুধ এবং শনিবারের লাকি ড্রয়ে ওই নম্বর দিয়ে লটারি খেলবেন বলে ভেবে নেন।

আরো পড়ুন>> শৈশব ফেরাতে মোবাইল-টিভির ওপর নিষেধাজ্ঞা

তবে প্রথম বারের চেষ্টায় নিরাশ হতে হয়েছিল কেলিকে। বুধবারের লাকি ড্রয়ে একসঙ্গে ৭-১৭-৩৭ নম্বর ভেসে ওঠেনি লটারির মেশিনে। তবে সপ্তাহান্তে ভাগ্য খুলে যায় কেলির।

বুধবারের লাকি ড্রয়ে লটারি জিততে না পেরে সেই টিকেটটি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন কেলি। টুকরো টুকরো করা সেই টিকেটটি ফেলে দিয়েছিলেন তাদের আবাসনের বাইরের ডাস্টবিনে।

তবে শনিবার টেলিভিশনে লাকি ড্রয়ের ফলাফল দেখে চমকে যান। মায়ের লেখা ওই নম্বরেই তিনি জিতেছেন ১ হাজার ৬০০ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২ লাখ টাকা।

লটারি জেতায় স্বাভাবিক ভাবে খুশিতে ভাসছেন কেলি। তবে ৪৪ বছরের এই নারীর মতে, এ সবই তার মায়ের আশীর্বাদের ফল। মা যে তার সঙ্গেই রয়েছেন, তাও মনে করেন কেলি।

সংবাদমাধ্যমের কাছে কেলি জানিয়েছেন, লটারি জেতার আনন্দে রেডিয়ো খুলতেই আরও এক বার হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। রেডিয়োতে বাজছে তার মায়ের প্রিয় গান— টিনা টার্নারের ‘ইউ আর সিম্পলি দ্য বেস্ট’।

আরো পড়ুন>> করোনা বিধিনিষেধ তুলে নিল পর্তুগাল

সংবাদমাধ্যমের কাছে তার লটারি জেতার কাহিনি শুনিয়েছেন কেলি। জানিয়েছেন, শনিবারের লাকি ড্রয়ে লটারি জেতার খবর শুনে আবাসনের ডাস্টবিন ঘেঁটে ওই ছেঁড়া টিকেটটি খুঁজে বার করেছিলেন। তার পর সেটি জোড়া লাগিয়ে ছুটেছিলেন লটারির দোকানে।

কেলি বলেন, ‘‘মায়ের নম্বর দিয়ে যে লটারি জিতেছি, তা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না! মেয়েকে নিয়ে তো প্রতি সপ্তাহেই মায়ের জন্য লটারির টিকেট কিনতে ছুটতাম! একটা ছোট কার্ডে প্রতি বার একই নম্বর লিখে রাখতেন মা। বছরের পর বছর ধরে একই নম্বরে লটারি খেলতেন। তবে কোনও বারই জিততে পারেননি। মায়ের স্মৃতিতেই ওই নম্বর দিয়ে লটারি খেলেছি।’’

লটারি জেতার পর মায়ের কথাই বেশি করে মনে পড়ছে কেলির। তার কথায়, ‘‘লাকি ড্রয়ে যখন নম্বরগুলো এল তখনও জানতাম, মা এখনও আমার আশপাশেই রয়েছেন। তবে আমি এখনও হতচকিত!’’

আরো পড়ুন>> নজিরবিহীন সংকটে দক্ষিণ এশিয়া: বিশ্বব্যাংক

অর্থ জয়ের পর কী করবেন? সংবাদমাধ্যমের এ প্রশ্নের জবাবে কেলি বলেন, ‘‘পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ব্ল্যাকপুলে ছুটি কাটাতে যাব।’’ কেলি জানিয়েছেন, ব্ল্যাকপুলের সমুদ্রতটে মেয়ে ডেমি এবং তার চার সন্তানকে নিয়ে কিছু দিন সময় কাটাতে চান তিনি।

লটারির নম্বরের মতো ছুটি কাটানোর জায়গা বাছার ক্ষেত্রেও মায়ের পছন্দই আগে মনে এসেছে কেলির। তিনি বলেন, ‘‘(ছুটি কাটাতে) ব্ল্যাকপুলে যেতে ভালবাসতেন মা। ওই নম্বরগুলো যে তার কাছে বিশেষ কিছু ছিল, তা জানতাম। আর ওই নম্বরগুলোই আমাদের জীবনে সুখস্মৃতি এনে দিয়েছে।’’

কেলি আরো বলেন, ‘‘আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিলেন মা। প্রতি দিন মায়ের অভাব বোধ করি। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে ওই নম্বরগুলি আমাদের ভাগ্য ফিরিয়ে দিয়েছে। মা নিশ্চয়ই ওপর থেকে আমাদের দেখছেন।’’

সূত্র: ডেইলি মেইল, আনন্দবাজার