পাকিস্তানের কাছে ২১ রানের হার সাকিবহীন বাংলাদেশের
প্রকাশিত : ১২:৩০ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২২ শুক্রবার
পাকিস্তানের-কাছে-২১-রানের-হার-সাকিবহীন-বাংলাদেশের
জয়ের জন্য ১৬৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পাকিস্তানের কাছে ২১ রানের হার মেনে নিতে হলো বাংলাদেশকে। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ ১৪৬ রান।
শুক্রবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের মাধ্যমে শুরু হয় ‘বাংলাওয়াশ টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ত্রিদেশীয় ক্রিকেট সিরিজ’। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ম্যাচটি শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় শুরু হয়।
হারের দিনে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম তিন ওভারে তো রান মাত্র ১৮। তারপর একটু হাত খুলে খেলতে গিয়ে আউট হন দুই ওপেনার মিরাজ ও সাব্বির। মিরাজ ১০ ও সাব্বির ১৪ রানে আউট হলে দলের হয়ে হাল ধরেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। লিটন ৩৫ রানে আউট হলে মোসাদ্দেক আসেন মাঠে। তিনিও ০ রানে ফিরে যান।
শুরুতে মিরাজ ও সাব্বির দু’জনের জুটিতে ২৫ রান উঠে গিয়েছিল। কিন্তু মোহাম্মদ ওয়াসিমের বল পুল করতে গিয়ে ব্যাটের উপরের কানায় লাগিয়ে বল উপরে তুলে দিলেন মিরাজ। ডিপ স্কোয়ার লেগে বল চলে যায় আসিফ আলির হাতে। ১১ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
প্রায় একই ভুল করে আউট হলেন সাব্বির রহমানও। লিটন দাসের সঙ্গে তার জুটিটা বড় হলো না। মাত্র ১২ রানের। ৬ষ্ঠ ওভারের ৫ম বলে হারিস রউফের বলকে ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু এখানেও বল ব্যাটের উপরের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায় এবং হারিস রউফ নিজেই ক্যাচ তালুবন্দী করেন।
তার পরই ১২.২ বলের মাথায় দলকে স্বপ্ন দেখানো লিটন দাস আউট হন। ৩৫ রানে নেওয়াজের বলে হায়দার আলীর কাছে ক্যাচ দেন তিনি। লিটনের পর মাঠে এসে থিতু হতে পারেননি মোসাদ্দেকও । কোনো রান করার আগেই ০ রানে নেওয়াজের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ধরা পড়েন তিনি।
একপাশ আাগলে দারুণ খেলছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। কিন্তু হঠাৎ খেই হারিয়ে ফেলেন তিনিও। ২৩ বলে ২৫ রান করে শাহনাওয়াজ ধানির বলে মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।
অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাট করতে পারেন। এ কারণে তারওপর প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু ৯ বল খেলে ৮ রান করে বিদায় নেন তিনিও। শাদাব খানের বলে ক্যাচ নেন ইফতিখার আহমেদ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ রিজওয়ানের অপরাজিত ৭৮ রানের ওপর ভর করে ১৬৭ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। ৩১ রান করেন শান মাসুদ, ২২ রান করেন বাবর আজম এবং ১৩ রান করে ইফতিখার আহমেদ। তাসকিন নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ এবং হাসান মাহমুদ।
এর আগে বাংলাদেশের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে রিজওয়ানের ৫০ বলে ৭৮ রানে ভর করে পাকিস্তান ৫ উইকেটে ১৬৭ রান সংগ্রহ করে। অর্থাৎ বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬৮ রানের। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিততে বাংলাদেশকে ১৬৮ রান করতে হবে।
ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ব্যাট করতে নেমে শুরুতে দেখে শুনেই ব্যাট করতে থাকেন বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। উদ্বোধনী জুটিতে ৫২ রান তোলার পর মিরাজের বলে বিচ্ছিন্ন হয় এই জুটি।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৫০ বল মোকাবেলা করে ৭৮ রান করেন পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি। মূল তার ব্যাটে করেই বড় রান করতে সমর্থ হয় পাকিস্তান।
শুরুতে মিরাজের প্রথম স্পেলের প্রথম বলেই ক্যাচ আউট হন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। তারপরই নাসুমের তৃতীয় ওভারের ৫ম বলে একই ভাবে বল উঠিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হন শান মাসুদ। ক্যাচ ধরেন মাহমুদ হাসান। এবার তাসকিনের শিকার হলেন হায়দার আলী। ইয়াসির আলীর হাতে ক্যাচ আউট হবার আগে তিনি করেন ৬ রান। এর আগে একই ভাবে বল উঠিয়ে মারতে গিয়ে মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে ক্যাচ দেন বাবর। আউট হবার আগে বাবর করেন ২২ রান আর শান মাসুদ করেন ৩১ রান।
হায়দার আলি আউট হলে ইফতিখার আহমেদ এসে জুটি বাধেন রিজওয়ানের সঙ্গে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে হাসান মাহমুদের বলে আফিফ হোসেন ধ্রুবর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ইফতিখার। ৮ বলে তিনি করেন ১৩ রান।
মারকুটে ব্যাটার আসিফ আলি জলে উঠার আগেই তাকে ফেরান তাসকিন। নিজের বলেই নিজে ক্যাচ ধরলেন তিনি। আসিফ আউট হলেন মাত্র ৪ রান করে। মোহাম্মদ নওয়াজ অপরাজিত থাকলেন ৮ রান করে।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে কেবল তাসকিনই পেলেন ২ উইকেট। মিরাজ, হাসান মাহমুদ এবং নাসুম আজমেদ পেলেন ১টি করে উইকেট।
সবচেয়ে খরুচে বোলার ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে একটি উইকেটও পেলেন না তিনি।
স্কোর
পাকিস্তান: ১৬৭/৫ ওভার ২০
রিজওয়ান : ৭৮*
শান মাসুদ : ৩১*
বোলিং
তাসকিন ২ উইকেট
বাংলাদেশ: ১৪৬/৮, ওভার ২০
ইয়াসির আলী: ৪২*
লিটন দাস: ৩৫
বোলিং
মোহাম্মদ ওয়াসিম: ৩ উইকেট
ফলাফল: পাকিস্তান ২১ রানে জয়ী