তিন বোন, ভাবি আর ফুফাতো বোনকে নিয়ে ‘পকেট মারেন’ তারা
প্রকাশিত : ১০:১৫ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০২২ বৃহস্পতিবার
তিন-বোন-ভাবি-আর-ফুফাতো-বোনকে-নিয়ে-পকেট-মারেন-তারা
তাদের কাজ রেলস্টেশনে, ট্রেনের ভেতর, হাসপাতালে গিয়ে কৌশলে ছেলেদের পকেট ও নারীদের ব্যাগ থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন চুরি করা। পাঁচ সদস্যের এই দলে রয়েছেন, তিন বোন, ভাইয়ের স্ত্রী ও এক ফুফাতো বোন।
নারী পকেটমাররা আটক হওয়ার পর রেলস্টেশনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুইজনের সাতদিন করে কারাদণ্ড এবং তিনজনকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম হাবিবুল হাসান এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
কারাদণ্ড পাওয়া দুইজন হলেন, হামিদা বেগম (২৭) ও রিপন আখতার (২৮)। আর রোজিনা বেগম (২৫), মর্জিনা বেগম (২৫), লিজা আখতারকে (২৩) মোট দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ জরিমানার টাকা আদায় করে মুচলেকা নিয়ে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের সবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ডরমন্ড গ্রামে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই পকেটমার দলের দলনেতা রিপন আখতার। তিনি তার আপন দুই বোন রোজিনা ও হামিদাকে নিয়ে আগে পকেট মারতেন। এরপর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী লিজা ও ফুফাতো বোন মর্জিনাকে দলে নেন। তারা রেলস্টেশন, ট্রেনের ভেতর ও হাসপাতালে পকেট মারেন এবং নারীদের ব্যাগ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন হাতিয়ে নেন।
প্রায় দুই সপ্তাহ আগে আক্কেলপুর রেলস্টেশনে এক নারী ট্রেনযাত্রীর স্বর্ণালংকার খোয়া যায়। রেলস্টেশনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে বোরখাপরা চার-পাঁচজন নারীকে ওই স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। ওই ঘটনার পর রেলস্টেশনের মাস্টার ও কর্মচারীরা রেলস্টেশনে সংঘবদ্ধ নারীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তারা দেখেন, পাঁচজন নারী এক সপ্তাহ ধরে জয়পুরহাট থেকে ট্রেনে এসে আক্কেলপুর রেলস্টেশনে নেমে আবার রিজার্ভ ইজিবাইক নিয়ে জয়পুরহাটে যান। এতে স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুন ও রেলস্টেশনের কর্মচারীদের সন্দেহ হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে নেমে ওই পাঁচ নারী জয়পুরহাট যাওয়ার জন্য ইজিবাইক ডাকছিলেন। তখন স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুন ও রেলস্টেশনের কর্মচারীরা তাদের ডেকে স্টেশন মাস্টারের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা এ সময় বলেন, তারা রাজশাহী যাচ্ছিলেন। ট্রেনে ভিড় থাকায় আক্কেলপুর রেলস্টেশনে নেমে জয়পুরহাটের দিকে রওনা হয়েছিলেন। পরে একাধিকবার প্রশ্ন করার পর তার অপরাধের কথা স্বীকার করেন। তখন থানা-পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খবর দেওয়া হয়। ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান।
আক্কেলপুর স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুন বলেন, গত কয়েক দিনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই পাঁচ নারীকে শনাক্ত করেন। তাদের পাঁচজনের মধ্য চারজন ভিড় করে মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেন আর একজন পকেট মারেন।