সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারতীয় কফ সিরাপ খেয়ে গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত : ১০:৫০ এএম, ৬ অক্টোবর ২০২২ বৃহস্পতিবার

ভারতীয়-কফ-সিরাপ-খেয়ে-গাম্বিয়ায়-৬৬-শিশুর-মৃত্যু

ভারতীয়-কফ-সিরাপ-খেয়ে-গাম্বিয়ায়-৬৬-শিশুর-মৃত্যু

ভারতীয় ওষুধ কোম্পানির তৈরি কফ সিরাপ খেয়ে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (৫ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ খবর জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সংস্থাটি জানায়, কিডনি জটিলতায় ভুগে গাম্বিয়ার ৬৬ শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে ভারতের একটি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির তৈরি কাশি ও ঠান্ডার দূষিত সিরাপের সম্পর্ক থাকতে পারে।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সাংবাদিকদের বলেছেন, জাতিসংঘের এই সংস্থা ভারতীয় নিয়ন্ত্রক এবং নয়াদিল্লিভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারক মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছে।

এছাড়া মেডেন ফার্মার পণ্যগুলো বাজার থেকে সরাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের প্রতি একটি চিকিৎসা পণ্যসংক্রান্ত সতর্কতাও জারি করেছে ডব্লিউএইচও।

তবে এ সতর্কতা জারির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি মেডেন ফার্মা। ফোন করে এবং খুদে বার্তা পাঠিয়েও ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। যোগাযোগ করা হলে গাম্বিয়া ও ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

সতর্কবার্তায় ডব্লিউএইচও আরো বলছে, মেডেন ফার্মার পণ্যগুলো অনানুষ্ঠানিক বাজারের মাধ্যমে অন্যত্রও সরবরাহ করা হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত শুধু গাম্বিয়াতে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, মেকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ—এই চার পণ্যের বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ডব্লিউএইচও বলছে, ল্যাব বিশ্লেষণে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এতে ‘অগ্রহণযোগ্য’ পরিমাণ ডাইথাইলিন গ্লাইকোল ও ইথিলিন গ্লাইকোল রয়েছে, যা খেলে বিষক্রিয়া হতে পারে।

জুলাইয়ের শেষের দিকে গাম্বিয়ায় পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে মারাত্মক কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে শনাক্ত হতে থাকে। পরে গত মাসে শিশুদের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখার ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।

স্থানীয়ভাবে বিক্রি করা একটি প্যারাসিটামল সিরাপ সেবনের তিন থেকে পাঁচ দিন পর কয়েকটি শিশু কিডনি জটিলতায় অসুস্থ হয়ে পড়লে গাম্বিয়ার চিকিৎসা কর্মকর্তারা জুলাইয়ে সতর্কতা জারি করেন। আগস্ট নাগাদ ২৮ শিশুর মৃত্যু হয়।

তবে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, এ সংখ্যা বাড়তে পারে। মৃত্যু এখন ৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে বলে বুধবার ডব্লিউএইচও জানিয়েছে।

শিশু মৃত্যুর ঘটনায় পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশটিতে তোলপাড় শুরু হয়। ইতিমধ্যেই হাম, ম্যালেরিয়াসহ একাধিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করছে দেশটি।

মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস তার ভারতীয় কারখানাগুলোতে ওষুধ উৎপাদন করে থাকে। কোম্পানিটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সেসব ওষুধ স্থানীয়ভাবে বিক্রির পাশাপাশি এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে রপ্তানি করা হয়।

সূত্র: আল-জাজিরা