৫ বছর পর হত্যার রহস্য উদঘাটন, মিলল কঙ্কাল
প্রকাশিত : ১১:১৫ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০২২ বুধবার
৫-বছর-পর-হত্যার-রহস্য-উদঘাটন-মিলল-কঙ্কাল
বুধবার সন্ধ্যায় সিআইডি ঝালকাঠি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ হত্যার ঘটনা সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরেন সিআইডি ঝালকাঠি ক্যাম্পের সহকারী পুলিশ সুপার মো. এহসানুল হক। এর আগে, একইদিন দুপুরে ঝালকাঠি সিআইডি পুলিশ রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি গ্রাম থেকে মাটি খুঁড়ে খাইরুলের কঙ্কাল ও কিছু আলামত উদ্ধার করে।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. এহসানুল হক জানান, ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাজাপুর বাইপাস মোড় থেকে মাদক সংক্রান্ত বিরোধের কারণে অপহরণ করা হয় স্থানীয় বাসকাউন্টার বয় খাইরুলকে। তিনি ঐ এলাকার আনসার আলীর ছেলে। খাইরুলকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে রাজাপুর থানায় মামলা করেন তার ভাই মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। এতে আসামি করা হয় স্থানীয় সৈয়দ জেহাদুল ইসলাম, রিয়াদ, কাজল, পলি বেগম, রুস্তমসহ অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় রাজাপুর থানা পুলিশ ফোরকান নামে একজনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার করলেও তার কাছ থেকে কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। পরে ফোরকান আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলাটি ঝালকাঠি সিআইডিকে তদন্ত করতে দেওয়া হয়। বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে একাধিক সোর্স নিয়োগ করেন। গত সোমবার সিআইডি পুলিশ রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি গ্রাম থেকে মিজান হাওলাদার মিজু নামে একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বকানুদাসকাঠি গ্রামের একটি কবরস্থানের বাঁশ ঝাড়ের নিচ থেকে খাইরুলের কঙ্কাল এবং পরনের জিন্সের প্যান্টের অংশবিশেষ এবং বেল্টসহ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত মিজান সিআইডিকে জানান, তার আপন দুই ভাই সোহাগ, মনির এবং ফোরকান ও গিয়াস এই চারজন মিলে খাইরুলকে খুন করেন। প্রথমে লাশ ফোরকানের বাড়ির পেছনে মাটিতে পুঁতে রাখেন। একমাস পর পূর্বকানুদাসকাঠি গ্রামের একটি কবরস্থানের বাঁশ ঝাড়ের নিচে পুঁতে রাখেন। দ্বিতীয়বার লাশ পুঁতে রাখার সময় মিজানুর রহমান মিজু ঘটনা দেখে ফেলেন।
এরপর মিজানুর রহমান মিজু নিজের বয়সের চেয়ে বড় একজন মহিলাকে বিয়ে করায় তার আত্মীয়-স্বজন তাকে ভর্ৎসনা করতেন। এ কারণেই ঘটনার পাঁচ বছর পর তিনি সিআইডির কাছে ঘটনা ফাঁস করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন জানান, সিআইডির হেফাজতে থাকা মিজানুর রহমান মিজুকে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করে তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে। এছাড়া উদ্ধারকৃত কঙ্কাল ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।
তিনি আরো জানান, ঘটনার পর যাদেরকে আসামি করা হয়েছিল তাদের কারো নাম মিজানুর রহমান মিজান বলেননি। এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বা মূল পরিকল্পনাকারী ফোরকানকে এর আগে গ্রেফতার করা হলেও তিনি জামিন পর থেকে পলাতক রয়েছেন। মাদক সংক্রান্ত বিরোধের কারণে ফোরকানের পরিকল্পনায় খাইরুলকে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনায় জড়িত গিয়াস উদ্দিন দুলালের এক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে।