বুরকিনা ফাসোতে ফরাসি দূতাবাসে আগুন
প্রকাশিত : ০৯:৫০ পিএম, ২ অক্টোবর ২০২২ রোববার
বুরকিনা-ফাসোতে-ফরাসি-দূতাবাসে-আগুন
শনিবার (১ অক্টোবর) এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সামরিক জান্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল পল অঁরি দামিবা ফরাসি সেনাঘাঁটিতে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর এসব হামলার ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভকারীরা বুরকিনা ফাসো থেকে ফরাসি সৈন্য ও সামরিক ঘাঁটি উঠিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশে প্রভাব বৃদ্ধির জন্য ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান দ্বৈরথের অংশ হিসেবে এসব ঘটনা ঘটছে।
এদিকে ফরাসি কূটনীতিকরা তাদের সেনাঘঁটিতে দামিবার অবস্থানের অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছেন। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দূতাবাস ও ইনস্টিটিউটে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বুরকিনা ফাসো কর্তৃপক্ষকে কূটনৈতিক স্থাপনার নিরাপত্তা বিধান করতে বলেছে।
আরো পড়ুন>> দামী স্মার্টফোন অর্ডার করে মিললো কাপড় কাঁচার সাবান!
শুক্রবার মধ্যরাতে বুরকিনা ফাসো টেলিভিশন স্টুডিও থেকে দেওয়া ঘোষণায় একদল সৈন্য দেশটির সামরিক জান্তা প্রধান দামিবা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন বলে জানায়। এ সময় নতুন সামরিক অভ্যুত্থানের নেতা হিসেবে ৩৪ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ত্রাওরির নাম ঘোষণা করা হয়।
পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থানের পর গতকাল সকাল থেকে রাজধানী ওয়াগাডুগু ও অন্যান্য শহরে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নেমে উল্লাস প্রকাশ করে। অনেকে বুরকিনা ফাসো থেকে ফরাসি সৈন্য প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এ সময় কারো কারো গায়ে রাশিয়ার পতাকা জড়ানো দেখা যায়।
দামিবা নিজেও আট মাসের কিছু বেশি সময় আগে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হন। শুক্রবার রাতে পাল্টা অভ্যুত্থানের পর থেকে তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
গতকাল বিকেলে নতুন জান্তা নেতৃত্বের পক্ষে এক বিবৃতিতে লেফটেন্যান্ট জঁ বাপ্তিস্ত কাবরি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত হবার পর দামিবা কামবোয়িঁসির ফরাসি সেনা ঘাঁটিতে পালানোর চেষ্টা করেন যাতে সেখান থেকে আমাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীতে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা যায়।
আরো পড়ুন>> শেষ মুহূর্তে গ্রেফতার এড়ালেন ইমরান খান
কাবরির এ বিবৃতি প্রকাশের কিছুক্ষণ পর ফরাসি দূতাবাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়াগাডুগুর ফরাসি দূতাবাসের সামনে একদল লোক মশাল হাতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছে এবং দূতাবাসের বাইরের প্রাচীরে আগুন জ্বলছে।
নতুন জান্তা প্রধান ইব্রাহীম ত্রাওরি গতকাল ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, দামিবাকে হত্যা অথবা তার বিচারের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। তিনি সন্ত্রাস দমনে ও প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা দেশের নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগ করব। সন্ত্রাস দমনে অন্যান্য অংশীদারের সঙ্গে আমরা কাজ করব।
ইব্রাহীম ত্রাওরির এ মন্তব্যকে রাশিয়ার প্রতি অংশীদারিত্বের আমন্ত্রণ মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। নেদারল্যান্ডস ইনস্টিউট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসের গবেষক কনস্তান্তিন গুভি বলেন, সামরিক জান্তা ও জনগণকে কয়েক মাস ধরে বিভক্ত করেছে যেসব বিষয়, তার মধ্যে একটি হলো আন্তর্জাতিক অংশীদার কে হবে সে প্রশ্নে মতভেদ। দামিবা ফ্রান্সের দিকে ঝুঁকছিলেন। এখন থেকে আমরা হয়ত জান্তাকে তুরস্ক অথবা রাশিয়ার মতো বিকল্প খুঁজতে দেখব।